Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:30 am

৯ বছরে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি বিশ্বনেতাদের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ৯ বছরের মধ্যে বন উজাড়ের কার্যকলাপ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। গ্লাসগোয় জাতিসংঘের জলবায়ু-বিষয়ক ‘কপ-২৬’ সম্মেলনের প্রথম বৃহৎ কোনো চুক্তি হিসেবে বন উজাড় বন্ধের বিষয়ে একমত হন তারা। গতকাল এ বিষয়ে এক চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ১৯ দশমিক দুুই বিলিয়ন ডলারের (১৪ বিলিয়ন পাউন্ড) একটি তহবিল গঠন করা হবে, যা সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে জোগান দেয়া হবে। খবর: বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা।

দক্ষিণ আমেরিকার বিশাল এলাকাজুড়ে আমাজন বনাঞ্চল বিস্তৃত। এ বনভূমির বিশাল অংশ ব্রাজিলের মধ্যে পড়েছে এবং সেখানে বনের গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বন উজাড়ের কার্যকলাপ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে এবং চুক্তি মোতাবেক বনাঞ্চলের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে প্রায় এক হাজার ৯২০ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করা হবে। দাবানল নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি সংস্কার ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যথাযথ নিরাপত্তায় ব্যয় করার জন্য এ তহবিলের অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলোও পাবে।

এদিকে বন উজাড়ের কার্যকলাপ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে সর্বশেষ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তারা সতর্ক করছেন, বনভূমি উজাড়ে ধীরগতি আনার বিষয়ে ২০১৪ সালের একটি চুক্তি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে এবং এ কারণে অঙ্গীকার পূরণে বিশ্বনেতাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিবিসি জানিয়েছে, এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং থাকছেন। এছাড়া ব্রাজিল, কানাডা, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। পৃথিবীর মোট বনভূমির প্রায় ৮৫ শতাংশই এ চার দেশে রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যসহ ১২টি দেশ ১২ বিলিয়ন ডলার (আট দশমিক ৭৫ বিলিয়ন পাউন্ড) তহবিল সংগ্রহ করবে, যেখান থেকে উন্নয়নশীল ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তা করা হবে। আর এভিভা ও এএক্সএ’র মতো ৩০টি বেসরকারি কোম্পানি সাত দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের (পাঁচ দশমিক তিন বিলিয়ন পাউন্ড) তহবিল জোগান দেবে। 

এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জলবায়ু ও বনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সিমন লিউস বলেন, বিভিন্ন দেশে বন উজাড় বন্ধে রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টি সুসংবাদ। বন উজাড় বন্ধে যথেষ্ট তহবিলও বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে সিমন লিউস আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোয় মাংসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নতুন এ সমঝোতা অনুসারে সেই চাহিদার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।

কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর প্রতিশ্রুতি মোদির: এদিকে ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতের কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শূন্যে নেমে আসবে বলে অঙ্গীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় ‘কপ-২৬’ সম্মেলনে এ অঙ্গীকার করেন তিনি।

মোদি বলছেন, ২০৩০ সালের মধ্যেই বিদ্যুতের ৫০ শতাংশ চাহিদাই পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলবে ভারত। ২০৩০ সালের মধ্যেই ভারতের কার্বন নিঃসরণ আরও এক বিলিয়ন টন কমিয়ে ফেলার দাবিও করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৫০ সালের মধ্যেই গোটা পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শূন্য করে ফেলা উচিত। তা না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকারক দিকগুলো থেকে কেউ বাঁচবে না। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত জীবাশ্মবিহীন শক্তি উৎপাদনের পরিমাণ ৫০০ গিগাওয়াটে নিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন মোদি।