৯ ব্যাংকের চেক ও পে-অর্ডার গ্রহণ করবে না চট্টগ্রাম বন্দর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: এস আলম গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট সাতটি ব্যাংকসহ ৯টি ব্যাংকের কোনো চেক ও পে-অর্ডার গ্রহণ করবে না চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। বন্দরের সেবা নিতে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব ব্যাংকের চেক বা পে-অর্ডার দিলে সেগুলো গ্রহণ না করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুস শাকুর স্বাক্ষরিত দপ্তর আদেশে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। গতকাল শনিবার দুপুরে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চবক সচিব ওমর ফারুক।
ব্যাংকগুলো হলোÑগ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।

চবক জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ৯টি ব্যাংকের সঙ্গে চবকের লেনদেন স্বাভাবিক নিয়মে চলছে না। এসব ব্যাংক থেকে আগের মেয়াদি আমানতসহ বিভিন্ন আমানত উত্তোলন করতে পারছে না চবক। ফলে এসব ব্যাংকে নতুন করে সব ধরনের লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা না পাওয়ায় বন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, ‘ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেয়ার অধিকার সব আমানতকারীর রয়েছে। ব্যাংকে বিনিয়োগ করার বিপরীতে ইন্টারেস্ট না পাওয়ায় বন্দর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেসব ব্যাংক থেকে ইন্টারেস্ট পাওয়া যাচ্ছে না, সেই ব্যাংকগুলোকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের কোনো রেসপন্সও পাইনি, যা ব্যাংকিং সুলভ আচরণ পরিপন্থি। দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোয় আমানত রাখা নিরাপদ না হওয়ায় আমরা টাকা তুলে নিতে চাচ্ছি, কিন্তু তাও সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করতে বাধার সম্মুখীন হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও যোগাযোগ করা হয়েছে।’

সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেই চবক চেয়ারম্যানের পরামর্শে ৯টি ব্যাংকের সঙ্গে ইস্যুকৃত সব ধরনের পে-অর্ডার, চেক ও ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান বন্দর সচিব।
জানা গেছে, পদ্মা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় চট্টগ্রাম বন্দরের ২২টি মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ১৭৯ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। ব্যাংকিং নীতিমালা অনুযায়ী, আমানতের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখে সুদ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকলেও গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বন্দরকে সুদ দেয়া বন্ধ করে দেয় পদ্মা ব্যাংক। এ অবস্থায় চবক ওই শাখার ২২টি মেয়াদি আমানতের মধ্যে ছয়টির বিপরীতে ৯৫ কোটি টাকা নগদায়নের জন্য চিঠি দেয়। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পদ্মা ব্যাংক ছাড়াও চিঠি দেয়ার পরও চবকে তহবিলে টাকা জমা দিচ্ছে না এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বেসিক ব্যাংক, আইসিবি, ন্যাশনাল ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এছাড়া এস আলম-সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চারটি শাখায় ২১২ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চারটি শাখায় ১৯০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দুটি শাখায় ১১৫ কোটি টাকা ও ইউনিয়ন ব্যাংকের ১১টি শাখায় ৪১১ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ রেড জোনে থাকা ব্যাংকে টাকা রাখা প্রসঙ্গে চবকের অর্থ ও হিসাব বিভাগের ঊর্ধ্বতন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (ব্যয়) বলেন, ‘আসলে কোন সময়ে এসব টাকা প্রাইভেট ব্যাংকে বিনিয়োগ হয়েছে, তা ঠিক বলা যাবে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা এফডি করে রাখা হয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক বা নিরাপদ ব্যাংক নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য থাকে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে যে নির্দেশনা আসে, সেটাই করতে হয়।’

দুর্নীতি-হয়রানির ন্যূনতম প্রমাণ পেলে অ্যাকশন নেব
মো. আবদুর রহমান খান এফসিএমএ গত ১৪ আগস্ট অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ছিলেন। বিসিএস (কর) ১৩ ব্যাচের এই কর্মকর্তা এনবিআরে যোগ দেয়ার পর থেকে এই দপ্তরকে ঢেলে সাজানো, দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত করা, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার রোধ, করনেট বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন। সম্প্রতি শেয়ার বিজের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শেয়ার বিজের প্রধান প্রতিবেদক রহমত রহমান

শেয়ার বিজ: করদাতাদের প্রচুর অভিযোগ থাকে; কিন্তু কোথায় গিয়ে কীভাবে অভিযোগ করতে হবে, প্রতিকার পাবেন কি নাÑএ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। অভিযোগ প্রতিকারের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কিনা? এনবিআরে সুশাসন আনার ক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন?

মো. আবদুর রহমান খান: আমাদের করদাতাদের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে, তারা এগুলো আমাদের কাছে জানাতে পারেন না। আমাদের সুন্দর একটি জিআরএস (গ্রিভেন্স রিড্রেস সিস্টেম বা অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা) পদ্ধতি রয়েছে। সম্পূর্ণ অটোমেটেড এই পদ্ধতি। আমাদের করদাতা ও ব্যবসায়ীদের অ্যাসোসিয়েশন এটা সম্পর্কে জানে না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই জিআরএস পদ্ধতি ব্যবহার করে কীভাবে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ থেকে অভিযোগ করবে, তা আমরা প্রচার করব। জিআরএস সিস্টেমে কোনো করদাতা বা ব্যক্তি অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গে সেই অভিযোগ সরাসরি অনলাইনে আমার কাছে চলে আসবে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ওই অভিযোগকে অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করব। যদি বড় ধরনের অভিযোগ থাকে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে যারা এই কাজগুলো করবেন, তাদের আমরা বিচারের আওতায় নিয়ে আসব। অত্যন্ত কঠিন বিধিবিধান আমরা প্রয়োগ করব। আমি সব চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন, বিজনেস কমিউনিটিকে বলবÑআমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ যদি অপেশাদার আচরণ করেন, আপনারা জিআরএস সিস্টেমে আমাদেরকে আপনাদের অভিযোগ জানান। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলবÑআমরা অত্যন্ত ট্যালেন্টেড পিপল। আমরা কম্পিটেটিভ পরীক্ষা দিয়ে আসছি। আমাদের ক্যাপাসিটি আছে। দেশটা আমাদের। আমাদের নতুন প্রজš§ আমাদেরকে যে বিশাল সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, এই সুযোগ বারবার আসবে না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা বৈষম্যমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই বাংলাদেশ গড়া একা একা হবে না।

আমি বিজনেস কমিউনিটিকে বলেছি, আপনারা বেশি বেশি ট্যাক্স দিন। ট্যাক্সের অতিরিক্ত কোনো টাকা খরচ করা লাগবে না। যখন অতিরিক্ত খরচ কমে যাবে, অটোমেটিক্যালি তারা বেশি বেশি ট্যাক্স সরকারি কোষাগারে দেবেন। একটা জনশ্রুতি আছে, আমরা যা রাজস্ব আদায় করি, বিজনেস কমিউনিটিকে তার কয়েকগুণ অন্যদিকে খরচ করতে হয়। আমরা যদি এটাকে অ্যাড্রেস করতে পারি, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করতে পারিÑযারা ভালো কাজ করবেন, তাদের অ্যাপ্রিশিয়েট করব এবং যারা খারাপ কাজ করবেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনব। আমি ট্যাক্সপেয়ার ও বিজনেস কমিউনিটিকে বলব, আপনাদের কমপ্লেন আমাদের জানান। আমরা কুইক অ্যাকশন নেব। আমরা যদি ন্যূনতম প্রমাণ পাই, আমরা সে ব্যাপারে ক্লিয়ার অ্যাকশন নেব। তাহলে তা কমে যাবে।

শেয়ার বিজ: সব জায়গায় শুদ্ধি অভিযান হচ্ছে। এনবিআর ও এনবিআরের মাঠপর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান করার উদ্যোগ নেবেন কি?
আবদুর রহমান খান: আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি এবং জিআরএস সিস্টেম দেখিয়ে দিয়েছি। আপনারা আমার কাছে যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে আপনাদের মতামত, অভিজ্ঞতা, অভিযোগ, ভোগান্তিÑআমাদের অফিসাররা কী ধরনের ডিলিং করেন, সে ধরনের তথ্য প্রমাণসহ আমার কাছে জানাতে পারেন। আমি কুইক অ্যাকশন নেব। আমার তরফ থেকে এটাই আমার শুদ্ধি অভিযান। আরেকটা হলো, সরকারের পক্ষ থেকে যে অভিযান করা হবে। আরেকটা হলো, বড় ব্যবসায়ী যারা কম ট্যাক্স দিচ্ছেন, তাদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে শুদ্ধি অভিযান করা হবে।

শেয়ার বিজ: অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানো খুবই জরুরি। বাজেটে যে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়, তা কোনো বছরই আহরণ করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে দেশে আর্থিক টানাপড়েন আছে। আপনি কীভাবে অভ্যন্তরীণ আয় বাড়াবেন?
আবদুর রহমান খান: অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের কোনো বিকল্প নেই। আমরা বিভিন্ন ইন্ডিকেটরে, বিশেষ করে করদাতার সংখ্যা, নিবন্ধিত করদাতা যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট না করা এবং ট্যাক্স নেটকে বড় করা। আমাদের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ দশমিক ২ শতাংশ ট্যাক্স নিবন্ধিত। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পার্সেন্টেজ ২৩-এর ওপরে। সুতরাং আমাদের অনেক নতুন করদাতা আনার সুযোগ রয়েছে। আবার যারা নিয়মিত করদাতা নিবন্ধিত হচ্ছেন, কিন্তু তাদের থেকে ট্যাক্স রিটার্ন ও ট্যাক্স পাচ্ছি কি না, এই মনিটরিংটা অত্যন্ত দুর্বল। আমরা এই কাজগুলো শুরু করব। প্রথমে ম্যানুয়ালি ও দ্রুত সময়ে আমরা ডিজিটাইজেশনে যাব। বিশেষ করে ট্যাক্স যেখান থেকে ফাঁকি হয় বা বড় বড় যেখান থেকে আমরা ট্যাক্স পাই না, সেখান থেকে ট্যাক্স আদায় করার চেষ্টা করব। বেশ কিছু কর অব্যাহতি রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলি, মৎস্য আয়, পোলট্রি ও ডেইরির আয়গুলোয় অনেক দিন কর অব্যাহতি ছিল। এখন এখানে অল্প কিছু ট্যাক্স করা হয়েছে। আমরা খেয়াল করেছি, এগুলো ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার একটা বড় জায়গা। যেহেতু এখানে ট্যাক্স রেট কম। আপনি অন্য ব্যবসার পাশাপাশি যদি বলেন, আমার এখানে বড় ব্যবসা আছে। এমনকি আইসিটি খাতেও অনেক বছর ধরে কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। যেখানে কর অব্যাহতি আছে, সেখানে আমরা দেখেছি কর ফাঁকি হচ্ছে।

আমাদের গ্রামে যে যুবক শ্রেণির শিক্ষিত বেকার যারা, যারা পোলট্রি চাষ করেন, অথবা যারা ডেইরি ফার্ম করেন, মাছের চাষ করেনÑসত্যিকার অর্থে তারা কিন্তু এই কর অব্যাহতির সুবিধা পান না। এসব যুবকের খোঁজ-খবর কেউ নেয় না। আমাদের ট্যাক্স অফিস ওই পর্যন্ত পৌঁছাতেও পারেনি। অথচ এই যুবকরাই সত্যিকারের মৎস্য, পোলট্রি ও ডেইরি উৎপাদক। তাদের জন্য আমরা কর অব্যাহতি দিলাম। বাস্তবে এই অব্যাহতি যারা ব্যবহার করেন, তা ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার একটি কৌশল। আইসিটি খাতেও একই অবস্থা। দেখা গেল, আইসিটি থেকে বিপুল পরিমাণ আয় হলো। কিন্তু দেখানো হয় লোকসান। এসব খাত আমরা ধীরে ধীরে চিহ্নিত করব। আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দ্রুত অটোমেশন করা। আমরা অল্প অল্প করে অটোমেশনে যাব।

আমরা এখন কমপ্লায়েন্সের দিকে বেশি জোর দেব। যত আইন হয়েছে, সে আইনগুলো কারা মানছে, কারা মানছে না এবং না মানার যে কারণÑসেগুলো আমরা দেখা শুরু করব। আমাদের প্রত্যেক ট্যাক্স পেয়ারকে মনিটর করব, তাদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ থাকবে। আমরা তাদের আস্থায় নিয়ে, কোনো ট্যাক্সপেয়ার যাতে এটা মনে না করে যে, ট্যাক্স অথরিটি আমার ওপর বল প্রয়োগ করছে। আমরা যে মেসেজ দিতে চাই তা হলো, এই দেশটা আমাদের। এই দেশ পরিচালনার জন্য এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজš§কে সুন্দর ও উন্নত জীবন দেয়ার জন্য, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের যা রেভিনিউ দরকার তা আমাদের জোগান দিতে হবে। আমাদের যাদের আয় বেশি তাদের দিতে হবে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা সুশাসন। আমাদের ট্যাক্স অথরিটিকে চিন্তা করতে হবে, আমি যাদের নিয়ে ডিল করি তারা আমার ক্লায়েন্ট। আমার ক্লায়েন্টের ফুল সেটিসফ্যাকশন নিয়েই আমি তার কাছ থেকে ট্যাক্স নেব। রাজস্ব প্রশাসনের রোল এমন হওয়া উচিত যে, ব্যবসায়ীদের কোনো ক্ষতি না করে তাদের গ্রো করতে দিয়ে ট্যাক্স আদায় করা। এমন ট্যাক্স আরোপ করব না, যাতে ট্যাক্স পেয়ার নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মৌমাছি যেভাবে ফুলের ক্ষতি না করে ফুল থেকে মধু আহরণ করে, ঠিক তেমনি রেভিনিউ অফিসাররা ট্যাক্স পেয়ারকে সেভাবে দেখবেন। বারবার তাদের কাছ থেকে ট্যাক্স নেবে এবং তাদের গ্রো করতে দেবে।

শেয়ার বিজ: পাঁচটি বড় কোম্পানি ও তাদের কর্ণধারদের বিরুদ্ধে করফাঁকির তদন্ত করা হচ্ছে। এ ধরনের অনেক বড় কোম্পানি ও তাদের কর্ণধাররা রয়েছেন। বড় করফাঁকিবাজদের কোনো তালিকা করা হয়েছে কি?
আবদুর রহমান খান: কর বিভাগের বড় কাজই হচ্ছে করফাঁকি খুঁজে বের করা। কিন্তু আমাদের ক্যাপাসিটি লিমিটেড। সারাবছর আমাদের কাজ করতে হয়। প্রায়োরিটি ঠিক করে হয়তো আগে পাঁচজনের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা আমরা ধীরে ধীরে বড় করব, সংখ্যা আরও বাড়বে। আমাদের ট্যাক্স লাগবে। সুতরাং দীর্ঘদিন ধরে যারা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে, তাদের ধরব। আরেকটা মেসেজ হলোÑআমাদের অডিট সিলেকশন নিয়ে অনেক কমপ্লেইন হয় যে, অডিট সিলেকশন প্রক্রিয়া ট্রান্সপারেন্ট নয়। আমাদের যখন ফুল অটোমেশন হয়ে যাবে, তখন সিস্টেম থেকে সিলেকশন হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অডিট সিলেকশন সিস্টেম আপাতত ফুল অটোমেটেড করব। ম্যানুয়ালি সিলেকশন আর হবে না। এ বছরই আমরা তা শুরু করব। তালিকা তৈরির কাজ চলছে, সময় লাগবে; শতাধিক হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০