নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বিতীয় ধাপের প্রণোদনার ঋণ বিতরণে গতি নেই। কভিড-১৯ মহামারিতে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় সিএমএসএমই খাতের জন্য সরকার যে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল করেছে, সেই তহবিলের ঋণ বিতরণে গতি একেবারেই কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত আট হাজার ৮৮০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো; যা বিতরণ মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
প্রণোদনার দ্বিতীয় ধাপে ১৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। হাতেগোনা কয়েকটি ব্যাংক ছাড়া বাকিগুলোর বিতরণের হার ৪০ শতাংশের নিচে। এ ঋণ বিতরণ তদারকি আরও জোরদার করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।
সিএমএসএমই খাতে প্রথম পর্যায়ে (২০২০-২১) লক্ষ্যমাত্রার ৭৭ শতাংশ অর্জন করে ব্যাংক। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে এ খাতের ঋণ বিতরণ মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। অঙ্কে যার পরিমাণ আট হাজার ৮৮০ কোটি। এর মধ্যে নারী উদ্যোক্তা ছিল চার হাজার ১১৮ জন, এবং পুরুষ উদ্যোক্তার সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ৮৫২ জন। তথ্যমতে, একক মাস হিসাবে মার্চে সিএমএসএমই খাতে দুই হাজার ৩৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
ব্যাংকগুলো এই তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ছোট-মাঝারি ও কুটির শিল্প খাতের শিল্পোদ্যোক্তাদের ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে। এর মধ্যে অর্ধেক, অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ পরিশোধ করবে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান। বাকি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সিএমএসএমই ঋণ বিতরণে অনেক পিছিয়ে আছে ব্যাংকগুলো। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো উপায়ে ক্ষুদ্রঋণের শতভাগ লক্ষ্য অর্জন করতে বলা হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এমডি ও নির্বাহীদের বলা হয়েছে। সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সব ধরনের ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ স্কিমের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ দেয়ার নির্দেশনা ছিল। ওই নির্দেশনা যথাযথ পরিপালন করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) সহজীকরণ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে রোজায় প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মোটর, পেঁয়াজ, খেজুর, ফলমূল ও চিনি আমদানি অর্থায়নের ক্ষেত্রে মার্জিনের হার ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্যও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।