শেয়ার বিজ ডেস্ক: কাতারে দীর্ঘদিনের শ্রম আইনের পরিবর্তন হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে কার্যকর হয়েছে নতুন আইন। তবে ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, নতুন আইনে কাতারে এখনও অভিবাসী শ্রমিকদের জোরপূর্বক শ্রমের ঝুঁকি রয়ে গেছে। খবর বিবিসি।
দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকের নিয়ন্ত্রক তার কাফিল বা স্পনসর। বেতন-ভাতা ঠিক সময়ে না পেলে, কিংবা শোষণের শিকার হলে চাকরি ছাড়া কিংবা অন্য কোথাও ভালো চাকরির সুযোগ পেলেও কাফিল বদলানোর সুযোগ নেই। প্রয়োজনে দেশে ফিরে এলে আরোপ হয় দুবছরের নিষেধাজ্ঞা। ‘কাফালা’ বলে পরিচিত এই ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার পর অবশেষে তা বাতিল হয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২২ সালে দেশটিতে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হবে। বিশাল এ আয়োজন ঘিরে কাতারের নতুন পরিবহন অবকাঠামো, গৃহনির্মাণ ও ছয়টি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলছে। দেশটিতে কাফালা পদ্ধতি চালু থাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত বিদেশি শ্রমিকরা চাইলেও চাকরি পরিবর্তন কিংবা দেশত্যাগ করতে পারতেন না।
এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শ্রম আইন সংশোধনের ঘোষণা দেয় কাতার। মঙ্গলবার থেকে কাতারে সংশোধিত আইন কার্যকর হয়েছে। নতুন এ আইনে শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তনে কোনো বিধিনিষেধ না থাকলেও অভিবাসী শ্রমিকরা শ্রম শোষণের শিকার হতে পারেন বলে সতর্ক করে দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, শ্রমিকরা দেশে ফিরতে চাইলে কাফিলের অনুমতি কিংবা অনাপত্তির প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনি অভিযোগ না থাকে, তবে তিনি ইচ্ছা ও প্রয়োজনমতো নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সমস্যাবিষয়ক উপ-পরিচালক জেমস লিঞ্চ বলেছেন, নতুন আইনে ‘স্পনসরশিপ’ শব্দটি তুলে দেওয়া হলেও একই ধরনের মৌলিক কিছু বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আনেনি। অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না। নিয়োগকর্তা অনুমতি না দিলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কমিটির কাছে এ বিষয়ে আবেদন করতে হবে।
এছাড়া নতুন আইনের অপব্যবহার হতে পারে বলেও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, এখন থেকে সব বিদেশি শ্রমিককে চুক্তির মাধ্যমে কাজে নিয়োগ করা হবে। এর ফলে নিয়োগকারী ইচ্ছা অনুযায়ী শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারবেন।
কোনো শ্রমিক যদি ছাঁটাই হন এবং সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ না করেন কিংবা যদি তার অভিযোগ আদালত আমলে না নেন, সেক্ষেত্রে নতুন আইন অনুযায়ী ওই শ্রমিক পরবর্তী চার বছরের মধ্যে আর কাতারে কাজের অনুমতি পাবেন না।