হালিমা আরানা প্রতিদিন বই পড়তে ভালোবাসেন। সন্তানদের সামনে খুব সুন্দর করে গল্পচ্ছলে পড়ে যান একের পর এক বই। জন্ম থেকেই এ গুণটি পেয়েছে তার চার বছরের মেয়ে ডালিয়া মেরি আরানা।
১২ মাস বয়সে বড় ভাইয়ের পড়া শুনে মাথা দোলাত ডালিয়া। সেই বয়সে বই টেনে নিয়ে আপন মনে আওড়াতো। ছোট শিশুরা তো এমন করেইÑ এটা ভেবে মা খুব একটা গুরুত্ব দেননি। তবে ১৮ মাস বয়সে তিনি উপলব্ধি করেন বইয়ের শব্দগুলো বুঝতে পারছে ডালিয়া। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন মা আরানা।
মাত্র দুই বছর এগারো মাস বয়সে প্রথম বইটি পড়ে ফেলে ডালিয়া। প্রথম বই পড়ার ভিডিও ধারণ করেছিলেন মা। এখন সেই ভিডিওটি অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৭ সালে ৪ বছরে পা দিয়েছে ডালিয়া। এটুকুন বয়সে পড়ে ফেলেছে এক হাজারের বেশি বই। যে বয়সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মায়ের মতো করে অঙ্গভঙ্গি করার কথা। সেই বয়সে এক হাজারের বেশি বই পড়ে ইতিহাস গড়েছে ছোট্ট ডালিয়া মেরি আরানা। সে এখন কলেজের টেক্সটবুকও পড়তে পারে।
তার পড়াশোনায় মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেস প্রধান ড. কারলা হেইডেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার লাইব্রেরি অব কংগ্রেস। এ মাসের ১১ তারিখ সেখানে একদিনের জন্য ছায়া গ্রন্থাগারিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ছোট্ট ডালিয়া। কেবল অলঙ্কারিক দায়িত্ব নেওয়াই নয়, সেদিন গ্রন্থাগারে হোয়াইট বোর্ড টানানোর পরামর্শও দিয়েছে। সে মনে করে, তার বয়সী শিশুরা এ ধরনের বোর্ডে লেখালেখি করতে পারবে। গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, এখন থেকে বইপ্রেমী বা পড়–য়া শিশুদের নিয়মিত নিমন্ত্রণ জানানো হবে লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে।
ডালিয়ার বাড়ি ফ্লোরিডার গেইনসভিলে। গেইনসভিলের হল কাউন্টি লাইব্রেরির সদস্য সে। রয়েছে লাইব্রেরি কার্ডও। তবে এলওসি বা লাইব্রেরি অব কংগ্রেসকে প্রিয় গ্রন্থাগার হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সে। কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হওয়ার আগে মোট ১ হাজার ৫০০ বই পড়ার ইচ্ছা রয়েছে ডালিয়ার।
তার প্রিয় লেখক ‘পিজিয়ন’ ও ‘এলিফ্যান্ট অ্যান্ড পিগি’ বই দুটোর লেখক মো উইলিমেস। ডাইনোসর বিষয়ক বই পড়তে ভালোবাসে ডালিয়া। প্রাগৈতিহাসিক এ প্রাণী নিয়ে ভবিষ্যতে গবেষণা করার ইচ্ছা আছে তার। একজন প্লেনটোলজিস্ট বা জীবাশ্মবিদ হওয়ার স্বপ্ন তার চোখেমুখে। চার বছর বয়সে একটি শিশু জীবাশ্মবিদের সংজ্ঞা জানে, একজন জীবাশ্মবিদ হতে চায়Ñ বিষয়টি চমকপ্রদ নিশ্চয়।
ডালিয়ার বাবা মিগুয়েল আরানা। মেক্সিকান। তিনি মাঝে মধ্যে ডালিয়ার সঙ্গে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন। স্প্যানিশ অনেক শব্দ বুঝতে পারে ডালিয়া। মা-বাবা আশা করছেন, শিগগির ইংরেজির পাশাপাশি স্প্যানিশেও দক্ষ হবে তাদের ছোট্ট সোনামণি।