চাষাবাদ

কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে আখ। এর পুষ্টিগুণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের আয়োজন

আখ আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থকরী ফসল। চিনি, গুড় বানিয়ে ও চিবিয়ে খাওয়া যায়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। জমিতে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ মাস থাকে। দেশের প্রায় সব জেলায় আখের চাষ হয়। তবে জলবায়ু অনুযায়ী দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো আখ চাষের জন্য উপযোগী। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, ঢাকা, ফরিদপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, যশোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা ও রাজশাহী আখ চাষের প্রধান এলাকা।
বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে আখ চাষ হয়। তবে প্রধান আখ উৎপন্নকারী দেশগুলো হচ্ছে ভারত, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, বারবাডোজ, চীন, কিউবা, মেক্সিকো, মিসর, জ্যামাইকা, পেরু, দক্ষিণ আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই, ফ্লোরিডা ও লুইজিয়ানায় প্রচুর পরিমাণে আখ উৎপন্ন হয়।

বৈশিষ্ট্য

আখ ঘাস-জাতীয় ও ডালপালাহীন বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ

গাছের পাতা কিছুটা ভুট্টা পাতার মতো। তবে অধিকতর শক্ত, সুচালো ও কিনারা ধারযুক্ত

উচ্চতায় দুই মিটার থেকে আট মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে

কোনোটি হালকা ও বেগুনি, কোনোটি সবুজ ও হলদে-সবুজ রঙের হয়।

জাত
স ঈশ্বরদী ২০, ঈশ্বরদী ২১, ঈশ্বরদী ২২, ঈশ্বরদী ২৪, ঈশ্বরদী ২৫, ঈশ্বরদী ২৬, ঈশ্বরদী ২৭, ঈশ্বরদী ২৮, ঈশ্বরদী ২৯, ঈশ্বরদী ৩০, ঈশ্বরদী ৩১, ঈশ্বরদী ৩২, ঈশ্বরদী ৩৩, ঈশ্বরদী ৩৪, ঈশ্বরদী ৩৭, ঈশ্বরদী ৩৮, ঈশ্বরদী ৩৯, ঈশ্বরদী ৪০ প্রভৃতি খরা, বন্যা, জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততাসহ প্রতিকূল পরিবেশ সহ্য করতে পারে।
স মুড়ি আখ চাষ উপযোগী জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরদী ২/৫৪, এলজেসি, ঈশ্বরদী ২০, ঈশ্বরদী ২১, ঈশ্বরদী ২৭, ঈশ্বরদী ২৮, ঈশ্বরদী ২৯, ঈশ্বরদী ৩০, ঈশ্বরদী ৩১, ঈশ্বরদী ৩২, ঈশ্বরদী ৩৩, ঈশ্বরদী ৩৪, ঈশ্বরদী ৩৭ ও ঈশ্বরদী ৩৮।
স চিবিয়ে খাওয়ার উপযোগী আখ সিও ২০৮, সিও ৫২৭, গ্যাণ্ডারি, অমৃত ও ঈশ্বরদী ২৪।

উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া
দোঁআশ, এঁটেল-দোঁআশ ও পলিমাটিতে আখের চাষ ভালো হয়। আখের জমি উঁচু ও সমতল হতে হবে। জমি তিন থেকে চারবার চাষ ও কয়েকবার মই দিয়ে তৈরি করতে হবে। আখের জমি ৫০ ফুট বা ১৫ দশমিক এক মিটার প্রশস্ত। ১০০ থেকে ২০০ ফুট বা ৩১ থেকে ৬২ মিটার দৈর্ঘ্যে ভাগ করে নিলে পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা কাটা সহজ হয়। যেসব জমিতে সহজে পানি জমে যায় ও পানি সরানোর ব্যবস্থা ভালো নয়, সে জমিতে আখ চাষ করা যাবে না। গড়ে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ সেলসিয়াস তাপমাত্রা আখ চাষের জন্য ভালো। তাপমাত্রা ১১ সেলসিয়াসের নিচে থাকলে আখ বড় হওয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়।

রোপণ
অক্টোবর থেকে এপ্রিলÑএ সময়ের মধ্যে রোপণ করা যায়। তবে আগাম রোপণই ভালো। এ সময় আখ যথেষ্ট বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ পায়। আখের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সাথি ফসলও চাষ করা যায়। বেশি গরম ও ঠাণ্ডা উভয়ই আখের জন্য ক্ষতিকর।

চাষ পদ্ধতি
সমতল বা বাঁওড়: এ পদ্ধতিতে লাঙল দিয়ে ৪৫ থেকে ৬১ সেন্টিমিটার দূরে নালা তৈরি করা হয়। ওই নালায় বীজ পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি গভীরে রোপণ করতে হয়।
নালা: এ পদ্ধতিতে জমিতে এক মিটার দূরে দূরে নালা কাটতে হয়। নালার গভীরতা ৩০ সেন্টিমিটার। ওপরের প্রস্থ ২৫ সেমি। নিচের প্রস্থ ৩০ সেন্টিমিটার। পাঁচ থেকে সাত সেমি গভীরতায় বীজ রোপণ ও মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।
রোপা: এ পদ্ধতিতে এক চোখবিশিষ্ট আখখণ্ড পলিথিন ব্যাগ কিংবা দুই চোখবিশিষ্ট আখখণ্ড বীজতলায় রোপণ করে সেই চারা মূল জমিতে রোপণ করা হয়।

বৃষ্টিপাত
মাঝারি ধরনের ১৭৮০ থেকে ২০৩০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি আখ চাষের জন্য ভালো। ১৫২০ সেন্টিমিটারের কম বৃষ্টি ভালো নয়। তবে বৃষ্টি কম হলেও সেচের মাধ্যমে আখ চাষ করা যায়। প্রথম সেচ বীজ বপন ও চারা প্রাথমিক বৃদ্ধির সময় দেওয়া উচিত। বৃষ্টির অভাবে জমির রস দ্রুত কমতে থাকলে দ্বিতীয় সেচ দিতে হয়।

সার দেওয়া
প্রতি হেক্টর জমিতে ইউরিয়া সার ১২০ থেকে ১৫০ কেজি, টিএসপি ৮০ থেকে ১১০ কেজি, এমওপি ১১০ থেকে ১৪০ কেজি, জিপসাম ৫০ থেকে ৬০ কেজি দিতে হবে। এর সঙ্গে জিংক সালফেট ১০ থেকে ১৫ কেজি, ডলোচুন ১০০ থেকে ১৫০ কেজি, জৈবসার দুই থেকে তিন টন প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সার ছাড়া অন্য সব সার শেষ চাষের সময় মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। অর্ধেক ইউরিয়া ও এমওপি রোপণ নালায় দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া ও এমওপি চারা রোপণের পর দিতে হবে।

পরিচর্যা

আখের জমিতে অনেক আগাছা হয়। আগাছা সময়মত পরিষ্কার করতে হবে। প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার আগাছা পরিষ্কার করার প্রয়োজন হতে পারে। এর সঙ্গে নালার মাটি নরম করে দিতে হয়। সেচ বা বৃষ্টির পর রোদে নালার মাটির উপরিভাগে শক্ত আবরণের সৃষ্টি হয়। এতে চারা গজানো এবং এর বড় হওয়ায় অসুবিধা হয়। তাই নিড়ানির সাহায্যে সেই আবরণ ভেঙে দিয়ে মাটি নরম করে দিতে হবে

যখন চারার উচ্চতা দুই থেকে তিন ফুট হয়, তখন গোড়ায় মাটি দিতে হয়। দুই সারির মাঝখানে যে মাটি জমা থাকে, সেই মাটিই গোড়ায় দেওয়া যায়। জমিতে সাথি ফসল থাকলে সেই ফসল ওঠানোর পর এই মাটি দিতে হয়। দ্বিতীয়বার গোড়ায় মাটি দিতে হয় আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে। বর্ষাকালীন পানি নালাপথে সহজে নিষ্কাশিত হতে পারে। ফলে গাছের গোড়া শক্ত হওয়াতে ঝড়-ঝাপটায় সহজে ভেঙে পড়ে না

জমিতে বেশিক্ষণ পানি যেন জমতে না পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে আখের বৃদ্ধি কমে যাবে এবং নানা ধরনের রোগ দেখা দেবে

গাছ যাতে হেলে না পড়ে, সেজন্য আখ গাছ বেঁধে দিতে হবে

আখের শুকনো পাতা ঝরে পড়ে না। তাই শুকনো পাতা ছিঁড়ে কেটে ফেলতে হবে। পাশাপাশি দুই সারির তিন থেকে চারটি ঝাড় এক সঙ্গে বেঁধে দিতে হবে।

রোগবালাই ও দমন লাল পচা রোগ: এ রোগের আক্রমণে আখের কাণ্ড পচে যায়। পাতাগুলো হলুদ হয়ে ধীরে ধীরে মরে যায়। এই রোগ প্রতিরোধের জন্য ভালো নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করতে হবে। রোপণের আগে বীজকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ০-১ শতাংশ কার্বেনডাজিমের (ব্যাভিস্ট্রিন) পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া ব্যাভিস্টিন (শূন্য দশমিক এক শতাংশ অথবা বাইনালেট ৭০ শতাংশ ডাবি-উপি (শূন্য দশমিক এক শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ) ১০ থেকে ১২ দিন পরপর দুই থেকে তিনবার সেচ প্রদানের পরপরই পাতার ওপর স্প্রে করতে হবে।

উইল্ট রোগ: এ রোগ দেখতে লালপচা রোগের মতোই। আক্রান্ত গাছের পাতাগুলো আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে মরে যায়। আখ কাটলে ভেতরের অংশে বেগুনি অথবা লাল রং দেখা যায়। চার থেকে পাঁচ মাস বয়সে রোগের আক্রমণ হলেও বয়স্ক আখ ছাড়া অন্য গাছে এ রোগের লক্ষণ ততটা বোঝা যায় না। এ রোগটি প্রতিরোধের জন্য আখ লাগানোর আগে আখের টুকরোগুলো শূন্য দশমিক এক শতাংশ ব্যাভিস্টিন দ্রবণে (পানি ও ব্যাভিস্টিনের অনুপাত ১০০০:১) ৩০ মিনিট ধরে শোধন করে রোপণ করতে হবে। হেক্টরপ্রতি ছয় থেকে সাত টন বীজ আখ শোধনের জন্য ২৫০ গ্রাম ব্যাভিস্টিন ২৫০ লিটার পানিতে মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করতে হবে।

মোজাইক রোগ: বীজ আখ ক্ষেতে দুই থেকে তিন মাস অন্তর মোজাইক রোগাক্রান্ত গাছ ঝাড়সহ তুলে ফেলতে হবে। বাহ্যিকভাবে যে কোনো বীজবাহিত রোগ যথা লালপচা, সাদাপাতা, লিফ স্কাল্ড প্রভৃতি দেখা গেলে তা ঝাড়সহ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
এছাড়া বিজলি ঘাস দমনের জন্য পাঁচ শতাংশ ইউরিয়া গুলে (ইউরিয়া: পানি=১:২০) রোদ্রকরোজ্জ্বল দিনে বিজলি ঘাসের ওপর স্প্রে করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘাস মারা যায়। তাছাড়া ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ আখ ও সাথি ফসলকে আক্রমণ করতে পারে। কীটপতঙ্গ ছাড়া নিমাটোড, মাইট, ইঁদুর, শেয়াল ও কয়েক ধরনের পাখি আখের ক্ষতি করে। কীটপতঙ্গের মধ্যে অন্তত ১৫ প্রজাতি মুখ্য ক্ষতিকারক প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে আখের ডগার মাজরা পোকা, কাণ্ডের মাজরা পোকা, উইপোকা, পাতার শোষক পোকা ও মিলিবাগ উল্লেখযোগ্য। এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না নিলে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। আখের গুণগত মান ও সে সঙ্গে আখের রসে চিনির পরিমাণ কমে যায়। কয়েক প্রজাতির উইপোকা, ঘাসফড়িং, মাইট ও মিলিবাগ ক্ষেতে বাড়ন্ত গাছের ক্ষতি করে এবং এসব পোকা দেশের প্রায় সর্বত্রই বিস্তৃত।

আখের সঙ্গে সাথি ফসল

আখের সঙ্গে সাথি ফসল বিশেষ করে ডাল-জাতীয় মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর, মুগ রোপণ করা যায়। মসলা-জাতীয় ফসলের মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ ও রসুন। তেল-জাতীয় ফসলের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় তিল, তিষি, সরষে, বাদাম প্রভৃতির কথা।

সুবিধা

আখের সঙ্গে সাথি ফসল ডাল, তেল, মসলা-জাতীয় ফসলগুলো জমি চাষ ছাড়াই বৃষ্টিনির্ভর অবস্থায় চাষ করা যায়, যা এককভাবে আখ চাষের চেয়ে অনেক লাভজনক

সাথি ফসল পরিচর্যার সময় আখের আংশিক পরিচর্যার কাজ হয়ে যায়

ডাল ফসলের গাছ ছোট, পাতা কম; সেজন্য আখের সঙ্গে এর পুষ্টি ও অন্য বিষয়ে প্রতিযোগিতা কম। ডাল-জাতীয় ফসল চাষে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়

এছাড়া পেঁয়াজ, রসুন চাষ করলে অতি অল্প সময়ে অতিরিক্ত একটি ফসল পাওয়া যায়। পেঁয়াজ ও রসুনের গাছ ছোট, পাতা কম ও সরু এবং গুচ্ছ মূলের পরিধি সীমিত হওয়ায় আখের সঙ্গে এদের মাটি থেকে পুষ্টি নিতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। পেঁয়াজ ও রসুনের পাতায় তীব্র ঝাঁঝ থাকায় আখে পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগে আখ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সাথি ফসল থেকে আংশিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়

আখের সঙ্গে সাথি ফসল চাষ করলে জমিতে আগাছা কম হয়। মূল ফসলের ফলন অনেকাংশে বেড়ে যায়

এ-জাতীয় ফসলগুলো আখ লাগানোর আগে শেষ চাষের সময় পরিমাণমতো বীজ বুনে দিতে পারেন। আবার আখের দুই সারির মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় সারি করেও বীজ বুনতে পারেন।

উৎস: কৃষি তথ্য সার্ভিস ও ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস

পুষ্টিগুণ

গরম ও ক্লান্তি থেকে হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে আখ কিংবা আখের রস ভীষণ উপকারী। একই সঙ্গে অনেক রোগবালাই থেকে আমাদের দূরে রাখতে সাহায্য করে এটি। জেনে নিন আখের কিছু গুণÑ

পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করে আখের রস। এতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ থাকে যা পানির ঘাটতি পূরণ করে

শক্তির ভালো উৎস এটি। আখের গ্লুকোজ ও অন্য ইলেকট্রোলাইট এক হয়ে দেহে শক্তি জোগায়

ডিহাইড্রেশনে ভুগে থাকলে এক গ্লাস আখের রস পান করুন। তাৎক্ষণিক তৃষ্ণা নিবারণ হবে, সঞ্চয় হবে শক্তি

আখে ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ কম। তাই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আখের রস উপকারী

আখের রস পানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমে

আখের রস শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে বজায় থাকে কিডনির স্বাস্থ্য

লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে আখ। তাই নিয়মিত এক গ্লাস রসেই বশে আসে জন্ডিস

আখের রসে থাকা পটাশিয়াম খাদ্য পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ করে। পেটের ইনফেকশন ঠেকানো ও ‘পেরিস্ট্যালসিস’ সংশোধনেও এটি কার্যকর

দাঁত সুরক্ষায়ও আখ উপকারী। এটি দাঁতকে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। খনিজ পদার্থ, পটাশিয়াম ও অ্যালকালাইন মিলে ইনফেকশনের বিরুদ্ধে ‘ব্যাকটেরিয়ারোধী দেয়াল’ হিসেবে কাজ করে

নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে আখ

আখের রসে থাকা ‘ফ্লাভোন’ নামের উপাদান শরীরে ক্যানসার কোষ উৎপাদনে বাধা দিতে সক্ষম

গবেষকদের মতে, এ রস শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। শরীর থেকে ‘ফ্রি-রেডিক্যালস’ দূর করে। আর লিপিড পার-অক্সিডেশনকেও বাধা দেয়

আখের রসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ‘আলফা হাইড্রোক্সি এসিড’ ও ‘গ্লাইকোলিক এসিড’ থাকে। এগুলো ত্বকের জন্য উপকারী। এতে ব্রণ কমে। দাগও দূর করে

নিয়মিত আখের রস পান করে বয়সের ছাপ দূরে রাখতে পারেন।

 

মিষ্টান্ন তৈরিতে


আখের রস মূলত চিনি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে আখের রস দিয়ে তৈরি গুড়ই দেশে চিনির বিকল্প ছিল। এখনও বিভিন্ন জেলায় গুড় তৈরি হয়। নানা কাজে এর ব্যবহার বিদ্যমান।
আখ কাটার পর এর কাণ্ড পরিষ্কার করে টুকরো করে মাড়াইকলের মাধ্যমে রস বের করা হয়। রস সংগ্রহের পর তা ছেঁকে পরিষ্কার করে বয়লারে জ্বাল দিয়ে ময়লার গাদ ফেলে দিতে হয়। এভাবে জ্বাল দিতে দিতে একসময় রস লালচে বর্ণ ধারণ করে এবং ঘন হয়ে গুড়ে পরিণত হয়। আখ থেকে বাটালি গুড়, ঝোলা গুড়, নালি গুড়, চিটা গুড় ও চিনি প্রভৃতি তৈরি করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের পিঠা, পায়েস, মিষ্টান্ন প্রভৃতি তৈরি করা হয়।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০