এখন শীতকাল। এ সময় জ্বর, কাশি বা ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন অনেকে। পাশাপাশি ত্বকও কেমন যেন শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই এ সময়ে ত্বকের সুস্থতাও প্রয়োজন। এ জন্য প্রয়োজন বিশেষ যত্ন ও খাবার নির্বাচনে সচেতনতা।
শীতকালে বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যায়, যেগুলো দেহ ও ত্বককে সুন্দর ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এ খাবারগুলো নিয়ম মেনে খেতে পারলে শীত বা ঠাণ্ডা যতই হোক না, কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না।
ফল
পাকা পেঁপে: শীতে ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। এছাড়া পাকা পেঁপেতে নানা রকম ফ্রুট এনজাইম রয়েছে, যা ত্বকের ত্বকে বিশেষ উপকারী। তাই শীতকালে পাকা পেঁপে তো খাবেনই। এর সঙ্গে এক টুকরো মুখেও মেখে নিতে পারেন।
কাজুবাদাম: শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। এতে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। এ ভিটামিন শরীরে পুষ্টি জোগায় এবং ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে
আঙ্গুর: শীতকালে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ আঙ্গুর শরীরকে সুস্থ রাখে, উজ্জ্বল করে ত্বক
বেদানা: শীতে যাদের ত্বকের সমস্যা একটু বেশি, তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রচুর পরিমাণে যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, তেমনি ভিটামিন ‘সি’ও পরিপূর্ণ। বেদানার ভিটামিন ‘সি’ শরীরের লোমকূপকে শক্ত রাখে। তাই সকালে খাবারের পর নিয়মিত এক গ্লাস বেদানার রস খেলে উপকার পাওয়া যাবে
আমলকী: ত্বকে জমে থাকা দূষিত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। রক্ত পরিশ্রুতও করে আমলকী। তাছাড়া এতে বিভিন্ন ভিটামিনের সমাহার রয়েছে, যা ত্বকে পুষ্টি জোগাতে সহায়ক
আতা: শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। শরীরের যে কোনো সংক্রমণ দূরে রাখে এ ফলটি। শীতকালে যদি নিয়মিত ফলটি খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের মরা কোষ ঝরে ফেলে নতুন কোষ উৎপন্ন হতে সাহায্য করে
অ্যাভোকাডো: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘ই’ রয়েছে। ফলটি ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে ফলিক এসিড, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকার কারণে শুষ্ক ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর ও প্রাণবন্ত।
পানীয়
দারুচিনি চা: শীতে অত্যন্ত উপকারী পানীয়। ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য এটি বিশেষভাবে কাজে দেয়। তাছাড়া এটি রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে হƒদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে ফেলে
আদা চা: শীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি
পানীয়। এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শীতের ঠাণ্ডায় রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, তবে আদা চা তা বাড়াতে সাহায্য করে
গ্রিন টি: এ মৌসুমে শরীরে উষ্ণতা আনতে একটি কার্যকরী পানীয়। গ্রিনটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী
গাজরের জুস: গাজরে ভিটামিন ‘এ’ থাকে। শীতকালে নিয়মিত খেলে ত্বক সুস্থ থাকবে
সবজি
বাঁধাকপি: শীতের সবজির মধ্যে উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’ রয়েছে, যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া রয়েছে ভিটামিন ‘এ’। শীতকালীন বিভিন্ন রোগ যেমন জ্বর, কাশি ও টনসিল প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে বাঁধাকপি
ওটমিল: খাদ্যশস্যের মধ্যে পুষ্টিগুণে গুণান্বিত। শীতে আমাদের শরীরের জন্য যে অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন তা ওটমিল পূর্ণ করে দেয়
পালংশাক: শীতে ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ উপাদানটি ত্বকের সুস্থ কোষ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে
ফুলকপি: ভিটামিন ‘সি’ ও ‘কে’ রয়েছে। পাশাপাশি এর ফলেট ও ভিটামিন ‘বি’ ত্বকের
যত্নে উপকারী
টমেটো: ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ রয়েছে, যা ঠাণ্ডায় শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
শীতকালে শাকসবজি, ফলমূল ছাড়াও কার্বোহাইড্রেট খাবার শরীরকে উষ্ণতা রাখতে সাহায্য করে ও ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। রুটি, ডাল, বাদাম, চিনি, মধু, দুধ, পাস্তা প্রভৃতি শীতকালে খেলে ঠাণ্ডা অনেকটা কমে যায়।
কামরুন নাহার ঊষা