ফ্রান্সের রেস্টুরেন্টে সোডা ও চিনি জাতীয় কোমলপানীয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্থূলতা রোধে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। নিষেধাজ্ঞাটি জারি হয় গত ২৭ জানুয়ারি। সেখানে সব ধরনের হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ ও স্কুল-কলেজের ক্যাফেটেরিয়া এখন থেকে সোডা ও অধিক চিনিমিশ্রিত পানীয় বিক্রি করতে পারবে না। একই সঙ্গে মিষ্টিজাতীয় সব ধরনের পানীয়তে অতিরিক্ত কর আরোপ করেছে ফ্রেঞ্চ সরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্সে স্থূলতা হার তুলনামূলক কম। ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের ৪১ শতাংশ অতিরিক্ত ওজনের। ৫৭ শতাংশ পুরুষ ভুগছেন এ রোগে। তারপরও দেশটির নাগরিকদের স্বাস্থ্য সচেতন করতে সোডা ড্রিংকস নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এর আগে ২০০৪ সালে বিদ্যালয়গুলো থেকে ভেন্ডিং মেশিন সরিয়ে নেয় ফ্রেঞ্চ সরকার। ২০১১ সাল থেকে সপ্তাহে মাত্র একদিন বিদ্যালয়ে ফ্রেঞ্চফ্রাই সরবরাহের নির্দেশ দেন আদালত। পরের বছর সোডার ওপর ট্যাক্স আরোপ করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় এবার রেস্টুরেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে মিষ্টিজাতীয় পানীয়।
আমাদের দেশেও সোডা বেশ পরিচিত পানীয়। তৃষ্ণা নিবারণ করতে অনেকে সোডা ও সোডাজাতীয় পানি পান করেন। সোডা পানে বাড়ে ক্যানসারের ঝুঁকি। অন্যান্য মিষ্টি কোমল পানীয়র মতো সোডার মধ্যেও রয়েছে অ্যাসপার্টেমের মতো চিনি। অনেক খাবার ও পানীয় এ চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রচলিত চিনির চেয়ে ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি এটি। এ চিনির কারণে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কে ক্যানসারের জীবাণু তৈরি করে অ্যাসপার্টেম। এক লাখ ২৫ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যারা অ্যাসপার্টেম দিয়ে তৈরি সোডা পান করেন, তাদের মধ্যে লিউকেমিয়া, লিম্পোমা ও মাল্টিপল মায়েলোমার প্রকোপ বাড়ে।
এ তো গেল সোডায় থাকা কৃত্রিম চিনির অপকারিতা। এছাড়া সোডায় রয়েছে নানা রাসায়নিক পদার্থ ও খাবারের রঙ। এগুলো শরীরের জন্য মোটেও উপকারী নয়। তাই আমাদের দেশেও নিষিদ্ধ করা উচিত সোডা ও মিষ্টিজাতীয় পানীয়। এর পরিবর্তে ফলমূল, শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। উপাদানগুলো শরীরের জন্য উপকারী।
সোডার মতো অন্যান্য সফট ড্রিংকসের অবস্থা একই রকম। এর পরিবর্তে ফলের রস খেতে পারেন। কৃত্রিমতা ছেড়ে প্রকৃতি প্রদত্ত খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে আমরাও ফ্রান্সের মতো কৃত্রিম পানীয় বর্জন করতে পারি।