পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানির অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করা উচিত

বর্তমানে যেসব কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই ভালো কর্মদক্ষতা দেখাতে পারছে না। ২০১০ সালে বাজার ধসের পর গ্রামীণফোন বাজারে আসাতে অনেক নতুন বিনিয়োগকারী এসেছিল। দুঃখজনক হচ্ছে গ্রামীণফোনের পর আর কোনো ভালো কোম্পানি এখন পর্যন্ত আসেনি। বিশেষ করে ইউনিলিভার কোম্পানিটি দেশে ১৭ থেকে ১৮ লাখ জনগণের জন্য বাজার তৈরি করেছে এবং কোটি টাকা লাভ করছে। কিন্তু পুঁজিবাজারে আনা সম্ভব হয়নি। অন্য দেশের দিকে তাকালে দেখা যায়, সে দেশে যদি কোনো বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা করতে চায় তাহলে ওই দেশের পুঁজিবাজারে বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্ত হতে হয়। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী, এফসিএ এবং শ্যামল ইক্যুইটির এমডি মো. সাজেদুল ইসলাম শামীম।
মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের আগে বাজার অনেক অবমূল্যায়িত ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর বাজার ইতিবাচক হবে এটা সবার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু জানুয়ারি শেষদিকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে আবার বাজার নি¤œগতিতে চলে যায়। শুধু শেয়ার বিক্রির চাপে যে বাজার নি¤œগতিতে তা কিন্তু নয়। বাজার এমন হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে ভালো মানের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে বাজারের গভীরতা যেমন বাড়বে তেমনি নতুন বিনিয়োগকারী আসতে শুরু করবে।
তিনি আরও বলেন, ওটিসি মার্কেট যে উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে না। মূলত ওটিসি মার্কেট করা হয়েছে যেসব কোম্পানি সময়মতো এজিএম, ইজিএম করে না বা লভ্যাংশ দেয় না তাদের জন্য। এ ধরনের কোম্পানিকে শাস্তি হিসেবে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয়। কিন্তু তা যদি স্পন্সরদের জন্য সুবিধাজনক হয় সেক্ষেত্রে স্পন্সররা তো চাইবে এ সুবিধা নিতে। আইনে যদি কোনো পরিবর্তনের নিয়ম থাকে সেটা ভেবে দেখা উচিত।
মো. সাজেদুল ইসলাম শামীম বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সেভাবে বাজারে টিকে থাকতে পারছে না। বরং ওইসব কোম্পানির ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালে বাজার ধসের পর গ্রামীণফোন আসার পর অনেক নতুন বিনিয়োগকারী এসেছে। দুঃখজনক হচ্ছে গ্রামীণফোন বাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর আর কোনো ভালো কোম্পানি এখন পর্যন্ত আসেনি। দেশে অনেক বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা করছে এবং শত কোটি টাকা মুনাফা করছে। বিশেষ করে ইউনিলিভার কোম্পানিটি দেশে ১৭ থেকে ১৮ লাখ জনগণের জন্য বাজার তৈরি করেছে এবং কোটি টাকা লাভ করছে। কিন্তু ওই সব কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনা সম্ভব হয়নি। এসব কোম্পানির বাজারে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, প্রণোদনার অভাব। আরেকটি হচ্ছে আইনের সঠিক প্রয়োগ। কিন্তু অন্য দেশের দিকে তাকালে দেখা যায়, সে দেশে যদি কোনো বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা করতে চায় তাহলে ওই দেশের পুঁজিবাজারে বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাজার খারাপ অবস্থার জন্য সব সময় বিএসইসি এবং ডিএসইকে দোষারোপ করা হয়। এটা আসলেই কাম্য নয়। আসলে বাজারসংশ্লিষ্ট আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারা কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ইস্যুয়ার হিসেবে কাজ করে। ওই সব মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কেমন? অর্থাৎ তারা সেভাবে দক্ষতা দেখাতে পারছে কি না সেটাও বিবেচ্য। আবার যেসব অডিটর কোম্পানির তথ্য অডিট করে তারা কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন এসব বিষয়ে নজরদারি করতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০