পুঁজিবাজারকে ঢেলে সাজাতে হবে

বর্তমানে বাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে। বাজার কেন এমন হচ্ছে? যদি সঠিকভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করা যায়, তাহলে কোন জায়গায় সমস্যা রয়েছে সেটি বেরিয়ে আসবে। আবার দেশে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ; কিন্তু পুঁজিবাজার যদি নিম্নগতিতে থাকে, তাহলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যাবে না। তাই বাজারকে গতিশীল করতে হলে ভালো মানের কোম্পানি আনতে হবে এবং খারাপ কোম্পানি যাতে আসতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। অর্থাৎ বাজারকে ঢেলে সাজাতে হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমেদ আল কবীর ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অর্থনৈতিক প্রতিবেদক আবদুর রহিম হারমাছি।
ড. আহমেদ আল কবীর বলেন, এখন প্রাক-বাজেট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। একটি বাজেটের মূল বিষয় দুটি। একটি হচ্ছে খরচের পরিমাণ, অপরটি আয়ের পরিমাণ। গত আট থেকে ১০ বছরে দেশে খরচ ও আয়ের পরিমাণ বেড়েছে। এটি দেশের জন্য ইতিবাচক। এ গতিধারা ধরে রাখতে হলে আয়ের নতুন খাত বের করতে হবে এবং এর সঙ্গে দক্ষতা ও রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়ায় কিছু নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। আবার ঋণখেলাপিদের বড় ছাড় দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা একের পর এক সুবিধা পাচ্ছে। এভাবে ঋণখেলাপিদের সুযোগ দিয়ে টাকা আদায় প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যাবে বলে মনে করি না। আসলে মূল বিষয় হচ্ছে খেলাপি ঋণ আদায় ব্যবস্থাপনায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। অর্থাৎ খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনি কাঠামোয় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। আর যাতে নতুন করে খেলাপি ঋণ না বাড়ে, সেজন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সার্বিকভাবে যদি পরিবর্তন না আনা যায়, সেক্ষেত্রে সাময়িক পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
তিনি আরও বলেন, এখন বাজার নিম্নগতিতে রয়েছে; অর্থাৎ বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম প্রতিদিনই কমছে। কিন্তু বাজার কেন এমন হচ্ছে। যদি সঠিকভাবে এ খাতে পর্যবেক্ষণ করা যায়, তাহলে সমস্যাটি বেরিয়ে আসবে। আবার একদিকে দেশের প্রবৃদ্ধি আট দশমিক এক শতাংশ; সামনে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। কিন্তু পুঁজিবাজার যদি নিম্নগতিতে থাকে, তাহলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যাবে না। তাই বাজারকে ভালো করতে হলে ভালো মানের কোম্পানি আনতে হবে এবং খারাপ কোম্পানি যাতে আসতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে; অর্থাৎ বাজারকে ঢেলে সাজাতে হবে।
আবদুর রহিম হারমাছি বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন নতুন অর্থমন্ত্রী বাজারের জন্য ইতিবাচক কিছু করবেন। গত ২৮ মার্চ অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার বিনিয়োগ সম্মেলনে বলেছিলেন, বাজার আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমি বাজার উন্নয়নে কাজ করব। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন, এ বাজার থেকে কেউ আশাহত হবেন না। কিন্তু গত সোমবার অর্থমন্ত্রী বিএসইসির এক সভায় সাংবাদিকদের দোষারোপ করে বললেন, বাজার ভালো আছে এবং স্বাভাবিক রয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি ২৮ মার্চ বললেন, আমার প্রতি আস্থা রাখুন, বাজার ভালো হবে। এটি আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু গত সোমবার তিনি বাজার সম্পর্কে সাংবাদিককে দোষারোপ করে উল্টো কথা বললেন। আসলে এখানে বিএসইসি অর্থমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়েছে বলে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, এখন বাজার ভালো অবস্থানে নেই। এখন মূল কাজ হচ্ছে, বিনিয়োগকারীদের বাজার সম্পর্কে আস্থা ফিরিয়ে আনা। যদি সেটা না করা যায়, তাহলে বাজার আরও খারাপের দিকেই যাবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০