ভারতীয় চলচ্চিত্রে ৫০ ও ৬০ দশকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী নার্গিসের আসল নাম ছিল ফাতিমা রশিদ। ১৯২৯ সালের ১ জুন
কলকাতায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৩৫ সালে ‘তালাশ-ই-হক’ নামে একটি ছবিতে শিশুশিল্পীর ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পথচলা শুরু তার। তবে ১৯৪২ সালের ‘তামান্না’ ছবিটি নার্গিসকে ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
এরপর ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত একের পর এক বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করেছেন নার্গিস। বেশিরভাগ ছবিতেই তার বিপরীতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাজ কাপুর।
নার্গিস অভিনীত ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৭ সালের ২৫ অক্টোবর। এপিকধর্মী এ ছবিতে অভিনয় করেন নার্গিস, রাজকুমার, সুনীল দত্ত ও রাজেন্দ্রকুমার। ‘বলিউড-মোগল’ মেহেবুব খানের এ ছবি শুধু নার্গিসের ক্যারিয়ারে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজই নয়, হিন্দি ছবির শতবর্ষের ইতিহাসেরও এক মাইলফলকও।
এ ছবিতে রাধার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। এছাড়া ওই বছর এজন্য তিনি ‘ন্যাশনাল ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড’-এ সেরা অভিনেত্রীর সম্মানও পেয়েছেন।
১৯৬৭ সালে নির্মিত ‘রাত অর দিন’ ছবিতে অভিনয় করে ভারত সরকারের জাতীয়
চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন নার্গিস। আরও
যেসব ছবি তাকে খ্যাতি এনে দিয়েছে, সেসবের মধ্যে ‘তকদির’ (১৯৪৩) ‘নার্গিস’ (১৯৪৬), ‘মেলা’ (১৯৪৮), ‘আঞ্জুমান’ (১৯৪৮), ‘আগ’ (১৯৪৮), ‘বারসাত’ (১৯৪৯), ‘আন্দাজ’
(১৯৪৯), ‘মিনাবাজার’ (১৯৫০) ‘জান পহচান’ (১৯৫০), ‘আধি রাত’ (১৯৫০),
‘আওয়ারা’ (১৯৫১), ‘দিদার’ (১৯৫১),
‘শ্রী ৪২০’ (১৯৫৫) ও ‘চোরি চোরি’
(১৯৫৬) উল্লেখযোগ্য।
নার্গিস ১৯৫৮ সালের ১১ মার্চ ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবির সহ-অভিনেতা নায়ক সুনীল দত্তকে বিয়ে করেন। তাদের তিন সন্তানÑসঞ্জয় দত্ত নায়ক, নম্রতা কুমার ও গৌরবের স্ত্রী প্রিয়া ২০০৫ থেকে ভারতীয় লোকসভার সদস্য।
১৯৮১ সালের ৩ মে ছেলে সঞ্জয় দত্ত বলিউড দুনিয়ায় পা রাখার কিছুদিন আগে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৫০-৬০ দশকের অন্যতম সেরা এ অভিনেত্রী।
তার স্মরণে ১৯৮২ সালে ‘নার্গিস দত্ত মেমোরিয়াল ক্যানসার ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন সুনীল দত্ত। এ ফাউন্ডেশনে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। দরিদ্র রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যানসার সম্পর্কে গবেষণাও পরিচালিত হয় এখানে।