Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:41 am

‘রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যু নয়, গুজবে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ও নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে সময় বেঁধে দেয়ার খবরে দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে বলে গত কয়েক দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসছে। এর মধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে। আর যুদ্ধের কারণে দেশের শেয়ারবাজারে সূচক পতন হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে কমিশন।

গতকাল রাজধানীর এক হোটেলে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) যৌথ উদ্যোগে ‘ইকোনমিক পলিসি ট্রায়াঙ্গল: ইন্টার রিলেশনশিপ অ্যামং ফিসকল, মানিটারি অ্যান্ড ক্যাপিটাল মার্কেট পলিসিজ’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসির কমিশনার বলেন, গত দুই কার্যদিবসে (বৃহস্পতিবার ও রোববার) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৭২ পয়েন্ট, যার জন্য রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ও নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে সময় বেঁধে দেয়াকে কারণ উল্লেখ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজারে যুদ্ধের জন্য সূচক পতন হওয়া যৌক্তিক নয়।

তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ হলেও তার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই কম। তাই আমাদের অর্থনীতিতে কম প্রভাব পড়বে। ফলে গত দুই দিনে যে পরিমাণ সূচক কমেছে, তা ঠিক নয়।

অন্যদিকে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তা পুরোপুরি ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এই কমিশনার। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে ২০১৫ সালে নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপরে নিয়মিতভাবে তা সমন্বয়ের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি বর্তমান কমিশন সময় বাড়িয়ে তা ২০২৩ সাল পর্যন্ত করেছে, যা শেয়ারবাজারের স্বার্থের প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে শেখ সামসুদ্দিন বলেন, শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে না। সবার আগে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তাই নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংক খাতের ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরের ব্যবধানে অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। তার সঙ্গে এ খাত তাল মিলিয়ে চলেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রাস্ফীতি, সুশাসন ও খেলাপি ঋণে বিশেষভাবে নজর দেয়া উচিত।

তিনি বলেন, এখন পুঁজিবাজারে ফোকাস করার মতো সময় এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকেরও উচিত বিভিন্ন খাতে পলিসির মাধ্যমে ফোকাস করা। এক্ষেত্রে মনিটরিং পলিসি আরও বাড়াতে হবে। আইনের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক সময় অনেক কাজ করতে পারে না। তবে এখন সময় এসেছে নীতিমালার পরিবর্তন করার। এ ব্যাপারে তারা কাজ করছে। ফলে শিগগির ব্যাংকের কাজে ভ্যারিয়েশন আসবে।

বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ, বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান, সিরডাপের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন, বিআইবিএমের অধ্যাপক ড. শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব প্রমুখ।