শিগগির সিটি ব্যাংকের অংশীদারিত্বে আসছে আইএফসি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দি সিটি ব্যাংকের মালিকানা ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) আসার প্রক্রিয়ায় যে অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছিল তা কেটে গেছে। গত ৩১ মে বাংলাদেশ ব্যাংক, আইএফসি ও সিটি ব্যাংকের ত্রিপক্ষীয় সভার পরই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এর ফলে আগামী তিন মাসের মধ্যেই সিটি ব্যাংকের পর্ষদে বসবে বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান আইএফসির দুজন পরিচালক।

জানতে চাইলে সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, আইএফসির সঙ্গে চুক্তির পর শেয়ার হস্তান্তরে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিলো তার অবসান হয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছি। এখন নিয়মানুযায়ী শেয়ার হস্তান্তর করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি।

তবে চলতি মাসেই প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার কেনার টাকা জমা দেবে। তারা ব্যাংকটিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে সহায়তা করবেন বলে আশা করছেন সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর ফলে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি দেশীয় কোনো ব্যাংকের পর্ষদে থাকার সুযোগ পাবে।

জানা গেছে, সিটি ব্যাংকের মালিকানা আসতে বেশকিছু শর্ত বেঁধে দেয় আইএফসি। সে অনুযায়ী ব্যাংকটি সংঘবিধিতে পরিবর্তন আনে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অনুমোদন না দিয়ে দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখে। অবশেষে গত ২৮ মার্চ সংঘবিধির বেশকিছু ধারায় পরিবর্তনের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে আইএফসির চাহিদামতো ধারা পরিবর্তন না হওয়ায় প্রক্রিয়াটা থমকে যায়।

এ নিয়ে গত ৩১ মে বাংলাদেশ ব্যাংক, আইএফসি ও সিটি ব্যাংকের ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যে কোনো পরিবর্তনে তাদের আপত্তি নেই। সে অনুযায়ী পরিবর্তন আনার জন্য বলা হয় সিটি ব্যাংককে। আইএফসিও এতে একমত পোষণ করে।

গত ১৯ জুন সিটি ব্যাংক এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বলেছে, ‘আমরা সংঘবিধিতে পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সিটি ব্যাংক ও আইএফসিও নিজেদের চুক্তি পুনর্বিবেচনা করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা আইএফসির জন্য নতুন শেয়ার ইস্যু করবো’।

দি সিটি ব্যাংকের পাঁচ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করে আইএফসি। ১৩১ কোটি টাকায় শেয়ার কেনার চুক্তি হয়। চুক্তির শর্ত মানতে গিয়ে ব্যাংকটি সংঘবিধির ৫০ এরও বেশি ধারা সংশোধন করে।

চুক্তি অনুযায়ী, ব্যাংকটির ইসুকৃত নতুন পাঁচ শতাংশ শেয়ার কিনবে আইএফসি। ২৮ টাকা ৩০ পয়সা হিসেবে ১৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় এ শেয়ার কেনা হবে। ব্যাংকটির চার কোটি ৬৫ লাখ শেয়ার পাবে আইএফসি। এর মধ্যে ১০ টাকা অভিহিত মূল্য ও ১৮ টাকা ৩০ পয়সা প্রিমিয়াম বা অধিমূল্য। এতে সিটি ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে ১৮ টাকা ৩০ পয়সা। পাঁচ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে আইএফসির দুই জন পরিচালক থাকবে সিটি ব্যাংকে। এ ছাড়া সিটি ব্যাংককে তিন বছর মেয়াদে দুই কোটি ডলার (১৬০ কোটি টাকা) ডলার ইকুইটিতে রূপান্তরযোগ্য ঋণ দেবে আইএফসি।

সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন বলেন, ‘শেয়ার হস্তান্তর নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল তা কেটে গেছে। শিগগির পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এর ফলে সিটি ব্যাংকে আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংকিং চর্চা শুরু হবে। পাশাপাশি ব্যাংকটির পরিচালনা ব্যবস্থাপনাও উন্নত হবে’।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০