নিজস্ব প্রতিবেদক : ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনকে (ইভিএম) ‘নিকৃষ্ট যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে জাতীয় নির্বাচনে তা ব্যবহারে আপত্তি তুলেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। নাগরিক এ সংগঠনের ভাষ্য, ইভিএমে ভোট যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। ফলে এই যন্ত্র ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ইভিএমে করার লক্ষ্য ইসির থাকলেও নিবন্ধিত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এর বিরোধিতা করেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এর পক্ষে বলছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে ইভিএমের বিষয়ে কথা বলে সুজন। সংগঠনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি- ইভিএম একটি নিকৃষ্ট যন্ত্র। প্রথমত একবার ভোট দিলে, ইসি যেটা বলবে সেটাই সঠিক তথ্য ও সত্য বলে ধরে নিতে হবে। আর কোনো যাচাইয়ের সুযোগ নেই। এ কারণে ইভিএম গ্রহণযোগ্য না। দ্বিতীয়ত ইভিএমের ভোট দিতে গিয়ে অনেকে বিরক্ত হয়েছে। যে যন্ত্র মানুষের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সে যন্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা কী?
ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের তৎপরতারও সমালোচনা করেন তিনি। বদিউল বলেন, যদিও নির্বাচন কমিশন বলেছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে ইভিএম নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার ইভিএমের পক্ষে যেন সাফাই গাওয়া শুরু করেছে। এটা কাক্সিক্ষত নয়।
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ক্ষমতাসীন দল ও তাদের জোটের শরিকরা ইভিএম চেয়েছে। অন্যান্য দলের ক্ষেত্রে তারা সংলাপে বসুক বা না বসুক, তারা ইভিএম নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়েছে; কয়েকটি দল বাদ দিয়ে সবাই ইভিএমের বিপক্ষে। সেক্ষেত্রে তাদের আস্থায় এনে ভোটে আনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে ইভিএমের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সেটা সম্ভব না। প্রধান স্টেক হোল্ডাররা ইভিএমের পক্ষে না থাকলে ব্যবহারের যৌক্তিতা নেই।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে ‘আচরণবিধি প্রয়োগ করতে না পারায়’ ইসির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম বলেন, সংসদ সদস্যের প্রচার এবং ফল ঘোষণার বিলম্ব নিয়ে ইসি ‘অসংলগ্ন’ কথা বলেছে।
কুমিল্লা নিয়ে আমাদের অনেক প্রশ্ন। এসবের সুরাহা হওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন। ইসি তাদের সক্ষমতা প্রকাশ করবে আইনকানুন বিধিবিধানের মাধ্যমে।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের দিনেই স্থানীয় অন্যান্য যে নির্বাচন হয়, তাতে আচরণ বিধিলঙ্ঘনের জন্য অনেক ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে সুজনের পর্যবেক্ষণ।
বদিউল আলম বলেন, কিন্তু কুমিল্লায় একজন সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আচরণবিধি প্রয়োগে রাঘব বোয়ালের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তারা (ইসি) আত্মসমর্পণ করেছে। এ জন্য তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার কন্ট্রাডিকটরি কথা বলেছেন। যেটা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন বস্তুত তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে আমাদের আশঙ্কা।

Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:31 pm
ইভিএমকে ‘নিকৃষ্ট যন্ত্র’ বলল সুজন
জাতীয়,প্রথম পাতা ♦ প্রকাশ: