Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 12:39 pm

বন্যার কারণে বন্ধ সাড়ে তিন হাজার স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশব্যাপী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ লাখ ছাড়ানোর খবর দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর। এদিকে সারা দেশে বন্যাপ্লাবিত এলাকায় তিন হাজার ৫০০টি স্কুল বন্ধ রয়েছে। তলিয়ে যাওয়া ছাড়াও দুর্গতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বলেও জানা যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ২৬টি জেলার ১৩১টি উপজেলায় বানের পানি ঢুকেছে বলে অধিদফতরের তথ্য। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৫৬৭টি পরিবারের ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ৯৪৪ মানুষ। আর এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘এসব জেলা কোনো না কোনোভাবে বন্যাক্রান্ত। কোনো কোনো জায়গায় কম পানি ঢুকেছে, কোথাও বেশি। কম-বেশি বন্যায় আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ২৬টি। এর মধ্যে ২০টি জেলা বন্যা উপদ্রুত। বাকি জেলাগুলোর একটি অথবা দুটি উপজেলা বা ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকেছে। কয়েকটা জেলা আছে যেখানে আগে থেকেই বন্যা চলছিল।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, দেশের বিভিন্ন বন্যা-উপদ্রুত এলাকায় ৯৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু আছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এক লাখ ২০ হাজার পরিবারের পাঁচ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

বন্যা-উপদ্রুত এলাকায় আট হাজার ৫০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিন কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিয়াজ আহমেদ। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত কমছে বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সাইফুল হোসেন।

দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আশাতীতভাবে উন্নতি হচ্ছে। পানি যে দ্রুত গতিতে বেড়েছিল এবং যে উচ্চতায় চলে গিয়েছিল, সেখান থেকে দ্রুত গতিতে কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না। ঢাকার আশপাশে এখনও বন্যার কোনো শঙ্কা না থাকলেও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে পানি বেড়ে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে পানি বাড়ছে। এটা আরও দু-তিন দিন থাকবে। তারপর সেসব এলাকার পানি কমবে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা এই তিন অববাহিকার মধ্যে গঙ্গার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের উজানের ভারতীয় অংশে এবং মেঘনা অববাহিকার ভারতীয় ও বাংলাদেশ অংশে পানি কমছে।

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার এবং সারিয়াকান্দি পয়েন্টে চার সেন্টিমিটার কমেছে। তবে এসব পয়েন্টে এখনও পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে।

উত্তরের ধরলা, তিস্তা, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী, করতোয়া ও ধরলা নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে কমছে। ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রামে ২২ সেন্টিমিটার কমেছে। তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে অপরিবর্তিত আছে, কাউনিয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার কমেছে। যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জে চার সেন্টিমিটার, কাজীপুরে তিন সেন্টিমিটার ও আরিচায় ১৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে।