নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির কয়েকজন সাবেক নেতার দল তৃণমূল বিএনপি। ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন শমশের মবিন চৌধুরী।

তফসিল ঘোষণার আগে আগে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলোর অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে দলটির এই ঘোষণা এলো।

আগের সপ্তাহে টানা ৭২ ঘণ্টা এবং চলতি সপ্তাহে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে চার দিনের অবরোধের তৃতীয় দিন বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তৃণমূল বিএনপির নেতা, যিনি একসময় ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, পাশাপাশি ছিলেন দলটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছয়শ’র বেশি নেতাকর্মী তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন।

ঘোষণা অনুযায়ী দলে যোগ দিয়েছেন সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সিরাজুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সাবেক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সাব্বির আহমেদ, ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক নেত্রকোনার মোহাম্মদ আলী, এলডিপির সাবেক নেতা লস্কর হারুনুর রশিদ প্রমুখ।

সরকার পতনের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল ও অবরোধ চলার মধ্যে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর শমসের মবিন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন, পাশাপাশি রাজনীতি থেকেও অবসরে যান। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে চেয়ারপারসন ও বিএনপির আরেক সাবেক নেতা তৈমুর আলম খন্দকারকে মহাসচিব করে তৃণমূলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

শমশের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করছি। আমরা দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই। নির্বাচনে কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে, এটা আমাদের দাবি।’

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা মনে করেন, রাজনৈতিক বিরোধের মীমাংসা হতে হবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে। তিনি বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসন্ত্রাসে তৃণমূল বিশ্বাসী নয়। আগুন সন্ত্রাস করে সংকটের কোনো সমাধান আসে না, আমরা লগি-বৈঠার তাণ্ডবও চাই না। আমরা সুষ্ঠু রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা হত্যার রাজনীতি সহিংসতাকে সমর্থন করি না। সুষ্ঠু রাজনীতি হবে সুশাসনের ভিত্তি।’

তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদা বিএনপি প্রতিষ্ঠার সময় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন, একাধিকবার মন্ত্রীও হন। পরে মতবিরোধে জড়িয়ে বহিষ্কৃত হন, গঠন করেন নিজের দল।

নিজের প্রথম দল বিএনএফ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে নাজমুল হুদা পরে গঠন করেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ), বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) ও তৃণমূল বিএনপি।

চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধন পায় নাজমুল হুদার তৃতীয় দলটি। এর তিন দিন পরই মারা যান নাজমুল হুদা। এর পর থেকে তার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা দল চালাচ্ছিলেন। এর সাত মাস পর দলটি নতুন করে আলোচনায় আসে।

অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি নিয়মনীতি মেনে পরিচালিত হবে। এটি প্রাইভেট কোম্পানি হবে না। আমাদের দলকে এমনভাবে সংগঠিত করতে চাই, যাতে করে শুধু রাজনীতি নয়, বরং স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে জনগণের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।’

তৃণমূল বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন শেখ হাবিবুর রহমান এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও মিডিয়া উইং চিফ সালাম মাহমুদও এ সময় বক্তব্য দেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০