Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:08 pm

বায়ুদূষণ ও শিশুর ফুসফুসের সমস্যা

দূষিত বায়ুর কারণে শিশুরা ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রের নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।
বায়ুদূষণ ও শিশুর ফুসফুসের সমস্যা: বাতাসে থাকা নানারকম উত্তেজক পদার্থ, যেমন সিগারেটের ধোঁয়া, শ্বাসপ্রশ্বাসতন্ত্রের ক্ষুদ্র বায়ুনালির অভ্যন্তরের দেয়ালে প্রদাহ সৃষ্টি করে, কোষের স্ফীতি ঘটায় ও মাংসপেশি সংকুচিত হলে বায়ুথলি থেকে বাতাস নির্গত হতে পারে না। এটি কখনও কখনও তীব্র হলে প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি হয়।

ব্রঙ্কিওলাইটিস: সাধারণভাবে নবজাতক ও অল্পবয়সি শিশুর ক্ষেত্রে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও বুকে শোঁ শোঁ শব্দের উপসর্গ নিয়ে এ রোগ প্রকাশ পায়। এ রোগ সচরাচর শীতকালে নির্দিষ্ট কিছু ভাইরাসের সংক্রমণে হয়।
দীর্ঘস্থায়ী এমফাইসিমা: ঘরে কোনো ধূমপায়ীর মাধ্যমে শিশুর হতে পারে পরোক্ষভাবে ধূমপানজনিত দীর্ঘকালের অসুখ। এ রোগে ফুসফুসে অতিরিক্ত মিউকাস উৎপন্ন হওয়ায় বায়ুথলিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসে বিঘ্ন ঘটে এবং রক্তে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়।

ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস: ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস প্রধানত বয়ঃসন্ধিকালের অসুখ। এতে শ্বাসনালির প্রদাহজনিত অতিরিক্ত শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয়। এর প্রধান কারণ ধূমপান। অনবরত কষ্টকর কাশি এ রোগের প্রধান উপসর্গ।
সর্দি-কাশি: শ্বাসতন্ত্রের সর্বাধিক দেখা দেওয়া অসুখ সর্দি-কাশি। এর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে সাধারণ মাত্রার জ্বর, কাশি, শিরঃপীড়া, নাক দিয়ে সর্দি ঝরা, হাঁচি ও গলাব্যথা।

কাশি: মৃদু থেকে মারাত্মক অসুখে কাশির উপসর্গ থাকতে পারে। যেমন সাধারণ সর্দি-কাশি, অ্যাজমা, সাইনোসাইটিস, বিভিন্ন ঋতুতে দেখা যাওয়া অ্যালার্জি, ক্রুপ, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা ও হুপিং কাশি।
নিউমোনিয়া: নিউমোনিয়া হলো ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত ফুসফুসের প্রদাহ। এ অসুখে জ্বর ছাড়াও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়। ফুসফুস রক্তে অক্সিজেন জোগান দিতে ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনে অক্ষম হয়ে পড়ে।

ফুসফুসের ক্যানসার: ধূমপান ও র‌্যাডন গ্যাসের ব্যবহারে ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। দীর্ঘমেয়াদি কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত, বুকব্যথা, গলাভাঙা বা কর্কশ স্বর, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট এর মূল উপসর্গ।
নবজাতক শিশুর শ্বাসরোগ: ঘরে ধোঁয়া ও ধূমপানের পরোক্ষ প্রভাবে নবজাতকের ফুসফুস ও বায়ুথলি চুপসে যায়। ফলে শিশু শ্বাস নিতে পারে না। নবজাতক শ্বাসকষ্ট, দ্রুত হƒৎস্পন্দন ও নীল হওয়ার লক্ষণাদি নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

প্রতিরোধ: শিশুকে সময়মতো ও নিয়মিত টিকাদান, দূষিত পরিবেশ ও বায়ুদূষণ থেকে সুরক্ষা, ধূমপানের সংসর্গ পরিহার এবং শিশুর নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ।