Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 1:49 am

শেষেও বড় হার বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক: বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীটা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টেও দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে যেখানে আগে ব্যাট করে সফরকারীরা বইয়ে দিয়েছে রানের বন্যা। ঠিক সেখানে টাইগারদের ব্যাটিংয়ের চিত্র উল্টো। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের অভিষেক ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর দলের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে, তারা যেন ভুলে গেছেন ব্যাটিংটা। যে কারণে লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৭৫ রানে হেরে গেছে টাইগাররা।

শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ১৮.৪ ওভারে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৩৫ রানে। তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ একটু লড়াই করেন। শেষ দিকে অলরাউন্ডার মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন কিছুটা সঙ্গ দেন অধিনায়ককে। কিন্তু তাদের ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি ম্যাচ জেতার জন্য খেলছেন। শেষ পর্যন্ত নড়বড়ে ব্যাটিংয়েই ৭৫ রানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজটাও ২-০তে হারতে হয়েছে স্বাগতিকদের।

রান তাড়ায় শুরুতেই সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিমকে হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান সৌম্য। আকিলা ধনাঞ্জয়ার অনেক বাইরের ফুল লেন্থ বল তাড়া করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন তিনি। পয়েন্টে ক্যাচ নেন জীবন মেন্ডিস। চার বলে শূন্য রানে ফেরেন এ বাঁহাতি। কিছুক্ষণ পরই শেহান মাদুশাঙ্কার অফ স্টাম্পের বাইরের বল পুল করে উড়াতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। টাইমিং করতে পারেননি। মিড অনে সহজ ক্যাচ নেন থিসারা পেরেরা। তিন বলে ছয় রান করে ফিরেন তিনি। পরের ওভারেই সেই মাদুশাঙ্কা তুলে নেন মোহাম্মদ মিঠুনের উইকেট। এক প্রান্ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে আশার প্রতীক হয়েছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু ইনিংসের অষ্টম ওভারে এ বাঁহাতি অভিষিক্ত আমিলা আপনসোকে উড়িয়ে গেলেন মারতে। তাতেই কাল হলো তার। ঠিকমতো টাইমিং করতে পারেননি। সীমানায় তার ক্যাচ নেন আকিলা ধনাঞ্জয়া। ২৩ বলে দুটি করে ছয়-চারে ২৯ রান করে ফিরে যান ড্যাশিং এ ওপেনার। আরিফুল হক টিকলেন মাত্র তিন বল। ফিরে গেলেন দুই সিঙ্গেল নিয়ে। তার বিদায়ে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের শেষ জুটি হারায় বাংলাদেশ। তাতে স্বাগতিকদের বিপদ আরও বেড়ে যায়।

ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ইনিংসের ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ৩১ বলে ৪১ রানে রান আউটে ফিরে যান অধিনায়ক। কিছুক্ষণ পরই ২১ বলে ২০ রানে সাজঘরের পথ ধরেন সাইফুদ্দিন। এরপরই মূলত পরাজয়ের ক্ষণ গণনা শুরু হয় স্বাগতিকদের। শেষ পর্যন্ত হয়েছে সেটাই।

এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল লঙ্কানদের ম্যাচে ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার কুসল মেন্ডিস ও দানুশকা গুনাথিলাকা। তাদের মজবুত সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্রিজে যে ব্যাটসম্যানই এসেছেন তুলোধুনো হয়েছেন টাইগার বোলাররা। এর মধ্যে গুনাথিলাকার ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। আর মেন্ডিস ধরে রাখেন তার ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা। ৭০ রান তুলে নেন তিনি। খেলেন মাত্র ৪২ বল। শেষদিকে থিসারা ১৭ বলে ৩১ আর উপুল থারাঙ্গা ১৩ বলে করেন ২৫। দানুশকা ১১ বলে ৩০ রান করলে লঙ্কানদের রান ২০০ পেরিয়ে যায়।

বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ, সৌম্য সরকার, মোস্তাফিজুর ও সাইফুদ্দিন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ২১০/৪ (গুনাথিলাকা ৪২, মেন্ডিস ৭০, থিসারা ৩১, থারাঙ্গা ২৫, শানাকা ৩১*, চান্দিমাল ২*; জায়েদ ১/৪৫, নাজমুল ০/২৮, মেহেদি ০/২৫, মোস্তাফিজ ১/৩৯, সাইফ ১/৪৬, সৌম্য ১/২৫)

বাংলাদেশ: ১৮.৪ ওভারে ১৩৫ (তামিম ২৯, সৌম্য ০, মুশফিক ৬, মিঠুন ৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, আরিফুল ২, সাইফ ২০, মেহেদি ১১, মোস্তাফিজ ৮, জায়েদ ২, নাজমুল ১*; মাদুশাঙ্কা ২/২৩, ধনাঞ্জয়া ১/২০, শানাকা ১/৫, থিসারা ০/৩৩, আপনসো ১/৩১, জিবন ১/৮, উদানা ১/১২, গুনাথিলাকা ২/৩)

ফল: শ্রীলঙ্কা ৭৫ রানে জয়ী

ম্যাচ ও সিরিজ সেরা: কুশল মেন্ডিস

সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়ী শ্রীলঙ্কা

 

 

 

 

 

 

 

 

আয় কমলেও টানা বাড়ছে ইনটেকের দর

নিজস্ব প্রতিবেদক: কিছুদিন ধরে পুঁজিবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। আর এই মন্দাবাজারে টানা বাড়ছে ইনটেক লিমিটেডের শেয়ারদর। অথচ দ্বিতীয় প্র্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির আয় কমেছে। সে সঙ্গে মূল ব্যবসা থেকে সরে গিয়ে মাছের যে ব্যবসা শুরু করেছিল, সে আয়েও ভাটা পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির। আয় কমার পরও কোম্পানিটির দর টানা বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।

তথ্যমতে, গতকাল রোববার ইনটেক লিমিটেডের শেয়ার সর্বশেষ ২১ টাকা ৭০ পয়সা দরে লেনদেন হয়েছে। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি কোম্পানির শেয়ার ১৬ টাকা ৬০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। অর্থাৎ মাত্র ছয় দিনে কোম্পানির দর বেড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ার সর্বনিম্ন ১৩ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৪ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ।

দর বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোম্পানি সচিব মো. মহিবুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘দর বাড়ার কোনো কারণ জানা নেই।’ মাছের ব্যবসায় আয় কমার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটি মূলত আইটি ব্যবসা করতে বাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করেছিল। কিন্তু তারা মাছের ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছে। আর মাছের ব্যবসায়ও কোম্পানিটি ভালো করতে পারছে না। অথচ টানা বাড়ছে তাদের শেয়ারদর। এ অবস্থায় কোম্পানিটির দর বাড়ার কারণ খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ইনটেক লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১০ পয়সা, আগের বছর একই সময় শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ১৪ পয়সা। তিন মাসে ইপিএস কমেছে চার পয়সা। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে এক পয়সা। আগের বছর একই সময় আয় হয়েছিল তিন পয়সা। অর্থাৎ আগের চেয়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে।

২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ইনটেকের পরিচালন আয় হয়েছে তিন কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ইন্টারনেট সার্ভিস থেকে আয় হয়েছে ৪০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, সফটওয়্যার থেকে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা এবং মাছের ব্যবসা থেকে আয় হয়েছে দুই কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময় পরিচালন আয় হয়েছিল ছয় কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ইন্টারনেট সার্ভিস থেকে ৫৭ লাখ টাকা, সফটওয়্যার থেকে ১৭ লাখ ১০ হাজার ও মাছের ব্যবসা থেকে পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে সফটওয়্যার ব্যবসায় আয় বেশ বেড়েছে। তবে মাছের ব্যবসায় আয় কমেছে তিন কোটি ৫১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪৫ টাকা বা প্রায় ১৬৫ শতাংশ।

পুঁজিবাজারে ২০০২ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা দুই কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার ৩২১টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে চার দশমিক ৭৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে সাত দশমিক ৮৩ শতাংশ, বাকি ৮৭ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।