নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি অনুমোদন (আইপি) ঢাকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতর থেকে পরিবর্তন করে আবারও চট্টগ্রাম থেকে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আমদানিকারকরা।
চট্টগ্রামের আমদানিকারকরা জানান, বিদেশ থেকে চাল, গম, ভুট্টা, বিভিন্ন ধরনের ডাল, তেলবীজ, মসলা, তাজা ও শুকনা ফল ইত্যাদি আমদানিতে এলসি খোলার আগে আমদানি অনুমোদন (আইপি) চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে নিতেন তারা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে আইপি সংগ্রহ করতে বলা হয়। এটি বৃহত্তর চট্টগ্রামের আমদানিকারকদের জন্য অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হবে। এ ধরনের নির্দেশনায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রাজস্ব আহরণ বাধাগ্রস্ত হবে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন আমদানিকারক ও শিল্পোদ্যোক্তারা। একই আইনে উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কোনো বিধিমালা লঙ্ঘন করা হলে বিশেষ ছাড়পত্র (এসআরও) দেওয়ার বিধানও বাতিল করা হয়। যা পুনর্বিবেচনার দাবি জানান চট্টগ্রামের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।
একাধিক আমদানিকারক শেয়ার বিজেকে বলেন, আমদানিকারক চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে ২-১ দিনের মধ্যে অনুমতিপত্র নিতে পারতেন, যা ঢাকা থেকে আনতে ৭-৮ দিন লেগে যাবে। ফলে ব্যবসা ব্যয় আরও একদফা বাড়বে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এ অঞ্চলে তাদের ব্যবসা ব্যয় এমনিতেই সর্বোচ্চ। বিগত প্রায় ১৭-১৮ বছর ধরে চলমান প্রক্রিয়া তাদের সক্ষমতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া নানা জটিলতার মাঝে ঢাকা থেকে আইপি সংগ্রহ করে আমদানি এল.সি করার ক্ষেত্রে ব্যাংকে সময়ক্ষেপণ অগ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন তারা। আমদানিকারকরা বলেন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছায় কৃষিপণ্য আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ব্যয় বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খলিলুর রহমান উদ্বেগ প্রকাশ করে শেয়ার বিজকে বলেন, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ উন্নয়নে সরকারের নীতি সহায়তার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ২০০২ সাল থেকে চলমান আইপি অনুমোদনপত্র জারি বাতিল করে পুনরায় রাজধানী ঢাকামুখী করার উদ্যোগ অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক। চট্টগ্রামের গুরুত্ব কমিয়ে আনা সরকারি নীতির পরিপন্থি।
অপরদিকে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ আমদানিকারকদের সুবিধার্থে উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকার পরিবর্তে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র, সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে আইপি ইস্যু কার্যক্রম পুনর্বহাল করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে কৃষিমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ অনুরোধ করেছি। তা না হলে ব্যবসা ব্যয় বাড়বে। যা বাজার অস্থিরতা তৈরি করবে।’