মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: বছরের বেশিরভাগ সময়ই মন্দা ছিল পুঁজিবাজার পরিস্থিতি। সে পরিস্থিতি এখনও বিদ্যমান। এ সময়ের মধ্যে (শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক দিয়ে) সবচেয়ে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করে ব্যাংক খাতে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে উঠে এসেছে এই খাত। গত অর্থবছরে শীর্ষে থাকা প্রকৌশল খাতকে টপকে শীর্ষে অবস্থান করে ব্যাংক খাত। এ খাতে বছরের ব্যবধানে লেনদেন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ডিএসইতে মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ দখল করে আছে ব্যাংক খাত। গত বছর এ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। লেনদেনে এ খাতের অবদান ছিল ১৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। এ খাতের অংশগ্রহণ ছিল ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খাতটির লেনদেন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যাংক খাতে বর্তমানে নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিন্তু খাতটি এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে। তালিকাভুক্ত সবগুলো ব্যাংকই এখন বিনিযোগের অনুকূলে। খাতটির গড় শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাতও রয়েছে সিঙ্গেল ডিজিটে। বর্তমানে ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত অবস্থান করছে আট দশমিক ৮৮ পয়েন্টে। যে কারণে এ খাতের শেয়ারের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এ বছর খাতটি থেকে ভালো লভ্যাংশ না পেলে আগামীতে সন্তোষজনক লভ্যাংশ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা ভালো মানের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে তাদের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। এখন তারা আগের চেয়ে সচেতন হচ্ছেন। তাই অনেক ভেবেচিন্তে বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছেন তারা। যার প্রতিফলন দেখা গেছে এসব খাতের কোম্পানিতে।’
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মিউচুয়াল ফান্ডসহ ১৯ খাতের তিন শতাধিক কোম্পানির মধ্যে বিদায়ী অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ব্যাংক ছাড়াও আরও চার খাতের শেয়ারের প্রতি আগ্রহ দেখা গেছে। এগুলো হচ্ছে: প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, টেক্সটাইল, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। বছরজুড়ে এসব খাতের শেয়ার সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিদায়ী অর্থবছরে মোট লেনদেনে প্রকৌশল খাতের খাতের অবদান ছিল ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। একইভাবে টেক্সটাইল খাতের লেনদেন ছিল ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অন্য খাত ওষুধ ও রসায়নের অবদান ছিল ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
গত বছর ২২ লাখ ৯০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন করে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। মোট লেনদেনে এ খাতের অংশগ্রহণ ১২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এছাড়া চতুর্থ অবস্থানে থাকা টেক্সটাইল খাতের লেনদেনে অবদান ছিল ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ খাতের শেয়ার কেনাবেচা হয় ২১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা।
বাজার-সংশ্লিষ্টদের মতে, উল্লিখিত খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী। তাছাড়া শেয়ারহোল্ডাররা এসব খাতের কোম্পানি থেকে সন্তোষজনক লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন। তুলনামূলকভাবে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত। সে কারণে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এসব খাতের কোম্পানির নাম।
এক বছরে ব্যাংকের লেনদেন বেড়ে দ্বিগুণ
