অ্যান্টার্কটিকার হিমশৈলে পানি সমস্যা মেটাবে আরব আমিরাত!

শেয়ার বিজ ডেস্ক: অ্যান্টার্কটিকার সমুদ্রে ভাসমান হিমশৈল টেনে এনে পানির সংকট মেটাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আবুধাবির বেসরকারি সংস্থা দ্য ন্যাশনাল অ্যাডভাইজর ব্যুরো লিমিটেড এ প্রকল্প নিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২০ সালের মধ্যেই এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে বলে ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। খবর খালিজ টাইমস।
ইউএই আইসবার্গ প্রজেক্ট নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে আনুমানিক ৫০ মিলিয়ন ডলার। বড় বড় হিমশৈল অ্যান্টার্কটিকা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পূর্ব উপকূলে ফুজাইরাতে টেনে নিয়ে আসা হবে। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছিল বেসরকারি এ সংস্থাটি। তখন রাজি হয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রশাসন। এতদিনে প্রশাসন রাজি হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে তারা।
প্রকল্প পরিচালক আল শেহি জানান, ২০১৯ সালের শেষদিকে প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হওয়ার কথা। তখন অ্যান্টার্কটিকার একটা বড় মাপের হিমশৈল টেনে নিয়ে আসা হবে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ উপকূলে বা দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে। এ পরীক্ষামূলক পর্বে আবহাওয়া, সমুদ্রের ঢেউ ও তাপমাত্রার প্রভাব বিবেচনা করা হবে। ঠিক কোন পথে অ্যান্টার্কটিকা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে টেনে নিয়ে যেতে হবে হিমশৈলÑতা বুঝে নেওয়া হবে এ পর্বেই।
প্রথমে হিমশৈলকে আরব আমিরাতের উপকূলে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর তার থেকে বরফ ভেঙে গলিয়ে পানিতে রূপান্তর করা হবে। সেই পানি বিশালাকার ট্যাংকে সংরক্ষণ করা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী পরিশোধন করে ব্যবহার করা হবে। পানি ছাড়া আরও একটি সুফল রয়েছে এ প্রকল্পের। দেশের উপকূলে এমন ভাসমান হিমশৈল থাকলে তা পর্যটনের প্রসারও ঘটাতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, আন্তর্জাতিক আইনের ‘দ্য হাই সি কোড’ অনুযায়ী হিমশৈল প্রয়োজনে যে কোনো বেসরকারি সংস্থা ব্যবহার করতে পারে। বিশ্বের যে কোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়াও যায়। এজন্য সরকারের কোনো অনুমোদনেরও প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে শুধু এটাই মাথায় রাখতে হয়, অ্যান্টার্কটিকায় কোনো হিমশৈল ভাঙা যাবে না। আল শেহি জানান, আমরা আইন মেনেই কাজ করছি। হিমশৈলকে অ্যান্টার্কটিকা থেকে তিন হাজার মাইল দূরে টেনে নিয়ে এসে তারপর সেটা ভাঙব।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে পানি সমস্যা প্রবল। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সে সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে বলে মনে করেন ওই সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ মুহাম্মেদ আল শেহি। শুধু ওই দেশই নয়, জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যেই বিশ্বের ৫০ শতাংশ মানুষ পানিকষ্টে ভুগবে। অথচ অ্যান্টার্কটিকায় সঞ্চিত বিপুল বরফ প্রকৃতপক্ষে সারা বিশ্বের মোট ৬০ শতাংশ স্বাদুপানি ধরে রেখেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য যা ইতোমধ্যেই গলতে শুরু করেছে এবং বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা এভাবে বরফ গলতে শুরু করলে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০