বর্তমানে পুঁজিবাজারের দৈনিক লেনদেন এক হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি হওয়া অবশ্যই বাজারের জন্য ইতিবাচক। তবে আমাদের ভালো শেয়ারের অভাব রয়েই যাচ্চে। ভালো বহু জাতিক কোম্পানি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনা খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ ভালো কোম্পানিগুলো এলে বাজারের গভীরতা আরও বাড়বে এবং বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের গ্রন্থনা, সম্পাদনা ও সঞ্চালনা অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন গ্রামীণ ক্যাপিটাল লিমিটেডের এমডি মো. আহসান উল্লাহ, পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সালাউদ্দিন আহমেদ, এফসিএ এবং বালি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক আরিফুর রহমান।
মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারের সূচক ছিল ছয় হাজার ২৪৪ পয়েন্টের আশেপাশে। বর্তমানে তা পাঁচ হাজার ৩৮০ পয়েন্টের মতো। প্রায় এক হাজার পয়েন্ট পতন হয়েছে। তারপরও বর্তমান বাজার নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। কারণ পুঁজিবাজারের টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মতে, সূচকের ক্ষেত্রে বাজারের বেঞ্চমার্ক হচ্ছে পাঁচ হাজার ৩৪০ পয়েন্ট। আর এর আশেপাশেই অনেক দিন যাবৎ সূচক উঠানামা করছে। এখান থেকেই কিন্তু ধীরে ধীরে বাজার ওপরের দিকে উঠছে। তবে বাজারের সূচক যদি পাঁচ হাজার ৩৪০ থেকে নিচের দিকে নেমে যায় তাহলে আরও ২০০ থেকে ৩০০ পয়েন্টের পতন হওয়ার সম্ভবনা আছে। কিন্তু বেঞ্চমার্ক থেকে যেহেতু নিচের দিকে না গিয়ে সূচক ওপরের দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং শুধু তাই নয়Ñবাজারের ট্রেড ভলিউমও গত দুই-তিন দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সেদিক বিবেচনায় বর্তমান বাজারের অবস্থা ভালো বলে মনে করি। লক্ষ্য করলে দেখবেন, গত বছরের নভেম্বরের ২১ তারিখে বাজারের ট্রেড ভলিউম ছিল এক হাজার ৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ দীর্ঘ ৭-৮ মাস আগের ট্রেড ভলিউমের পর্যায়ে এখন আবার আসছে। কাজেই সবদিক বিবেচনায় বাজার বর্তমানে ইতিবাচক বলে মনে করি।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে আইসিবির ভূমিকা অনেক বেশি এবং আইসিবির যে কোনো খবরে বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। তাই আইসিবির থেকে আমরা সব সময়ই একটি ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করি। তাছাড়া আইসিবিকে গঠন করা হয়েছেই বাজারকে সহায়তা করার জন্য। তিনি বলেন, বাজারের বর্তমান অবস্থা আগের তুলনায় ভালো। কারণ বেশ কয়েক মাস ধরে বাজারে আমরা ৪০০-৫০০ কোটি টাকার টার্নওভার দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। সেখানে বর্তমানে পুঁজিবাজারের টার্নওভার এক হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি হওয়া অবশ্যই বাজারের জন্য ভালো। তবে আমাদের ভালো শেয়ারের অভাব রয়েছে। ভালো বহু জাতিক কোম্পানিগুলোকে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনা খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে এলে বাজারের গভীরতা বাড়তো এবং বাজার আরও সম্প্রসারিত হতো।
আরিফুর রহমান বলেন, আইসিবির ভূমিকা স্বচ্ছ কি অস্বচ্ছ তা আসলে তাদের কার্যকলাপেই বোঝা যাবে। আইসিবির ভূমিকা বাজারের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা। পুঁজিবাজারে শেয়ারদর অধিকহারে বেড়ে বা কমে গেলে শেয়ার ক্রয় ও বিক্রয়ের মাধ্যমে বাজারে ভারসাম্য রাখার দায়িত্ব তাদের। আর এটাই হচ্ছে বাজারে আইসিবির মূল কাজ। ইদানীং তাদের এ ভূমিকা পালনে তেমন তৎপরতা দেখা যায় না।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম