জনসনকে ৪৭০ কোটি ডলার জরিমানা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকম পাউডার ব্যবহারে ওভারিয়ান ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগকারী ২২ নারীকে ৪৭০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের আদালত। প্রাথমিকভাবে ওই নারীদের ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ এবং আরও চার দশমিক এক বিলিয়ন ডলার শাস্তিমূলক জরিমানা দিতে বলা হয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসনকে। খবর বিবিসি।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে একই ধরনের আরও অন্তত ৯ হাজার অভিযোগ আদালতে ঝুলছে। এর মধ্যে শিশুদের জন্য জনসনের তৈরি পাউডারের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। জনসন অ্যান্ড জনসন বলছে, তারা আদালতের এই রায়ে হতাশ এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে।
আদালতে ছয় সপ্তাহ ধরে চলা শুনানিতে ওই নারীরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, কয়েক দশক ধরে জনসনের বেবি পাউডার ও ট্যালকম পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের কারণে তাদের শরীরে ওভারিয়ান ক্যানসারের সৃষ্টি হয়েছে।
নারীদের আইনজীবীরা বলেছেন, জনসনের ট্যালকম পণ্য যে ১৯৭০ সাল থেকেই দূষিত সেটি কোম্পানি অবগত আছে, কিন্তু এর পরও তারা পণ্য ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে ভোক্তাদের সাবধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ট্যালকম পাউডার তৈরির প্রধান উপাদান ট্যালক, যার রাসায়নিক নাম ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট; এটি প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সবচেয়ে নরম খনিজ পদার্থ। এতে রয়েছে অ্যাসবেস্টস; অ্যাসবেস্টস হলো প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ছয় সিলিকেট খনিজের একটি সেট। সুবিধাজনক প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যর কারণে এটি বাণিজিকভাবে ব্যবহার করা হয়। রেশম ও পশমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এই খনিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনেক মিল দেখা যায়।
অ্যাসবেস্টস আঁশের দীর্ঘায়িত শ্বসন ফুসফুসের ক্যানসার, মেসোথেলিয়মা এবং অ্যাসবেস্টসের মতো গুরুতর অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) অ্যাসবেস্টসের সব ধরনের নিষ্কাশন, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
জনসন অ্যান্ড জনসন তাদের পণ্যে অ্যাসবেস্টস থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তাদের পণ্য ব্যবহারে ক্যানসার হওয়ার শঙ্কা নেই। প্রতিষ্ঠানটি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে জানিয়ে বলছে, কারণ তারা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ওই পাউডার তৈরি করছে। জনসনের আইনজীবী বলেন, বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে তাদের ট্যালকম পাউডার নিরাপদ এবং পণ্যে ক্যানসার ছড়ানোর মতো ক্ষতিকারক কোনো উপাদান নেই। একই সঙ্গে আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া অন্যায্য বলেও দাবি করেছে মার্কিন এই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান।
এদিকে ২০০৯ ও ২০১০ সালে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জনসন অ্যান্ড জনসনসহ আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানির পাউডারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালায়। পরে এই পরীক্ষায় জনসনের পাউডারে অ্যাসবেস্টস পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। আদালতকে আইনজীবীরা বলেন, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগ ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি ব্যবহার করে পরীক্ষা চালিয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০