নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য তিন হাজার ৫৯৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সে সঙ্গে সদ্যসমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও অনুমোদন দেওয়া হয়।
গতকাল বুধবার নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএসসিসির বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এ সময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিল্লাল, সচিব সাহাবুদ্দিন খান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আবদুল মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবারের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৫৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা কমিয়ে ৯০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। গত অর্থবছরে যা ছিল এক হাজার ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় ছিল লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম, ৪৫৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
ঘোষিত বাজেটে সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প থেকে দুই হাজার ৫৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, সরকারি মঞ্জুরি (থোক) থেকে ৭০ কোটি টাকা, সরকারি বিশেষ মঞ্জুরি ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প থেকে দুই হাজার ৪৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে। বাজেটে মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে দুই
হাজার ৮৬০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। পরিচালন ব্যয় ৬১৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ব্যয় ৩০ কোটি টাকা।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে তিন হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছিল ডিএসসিসি। এর মধ্যে দুই হাজার ১৪ কোটি ৭৩১ লাখ টাকার বাজেট বাস্তবায়ন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আমরা একটি বাসযোগ্য আধুনিক নগরী গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখানে প্রতিটি নাগরিককে সহায়তা করতে হবে, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি নাগরিককেই নিজেকে মেয়র মনে করতে হবে এবং নিজের নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ৭৪২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় করবে ডিএসসিসি। শিশুপার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়নে ১৪৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরেছে ডিএসসিসি। এছাড়া এবারের বাজেটে ৩৪০ কোটি টাকা বেতন-ভাতা বাবদ, ভৌত অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণে ২৬ কোটি টাকা, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম বাবদ ৭৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপন ও প্রচার বাবদ ছয় কোটি ৫০
লাখ টাকা, নতুন বাজার নির্মাণ বাবদ ২০০ কোটি টাকা, জবাইখানা নির্মাণ বাবদ ৬৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
মেয়র জানান, শোকের মাস উপলক্ষে ১ আগস্ট থেকে আগামী এক বছর ডিএসসিসি এলাকার নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে দাফন সেবার ব্যবস্থা রাখবে তার সিটি করপোরেশন। যদি কোনো নাগরিকের এমন সেবার প্রয়োজন হয়, তাহলে ডিএসসিসি থেকে দাফন, লাশবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, জানাজার
ইমাম, গোসলসহ সবকিছু ডিএসসিসি বিনা মূল্যে করে দেবে।
এছাড়া ডিএসসিসি অস্থায়ীভাবে একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানান মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, নাগরিকদের ভেতরে অনেকেই শেষ বয়সে পরিবার কর্তৃক পরিত্যক্ত অথবা পরিবার-পরিজনহীন নিঃস্ব অবস্থায় জীবনযাপন করেন। তারা তখন নিরাপদ আশ্রয়স্থল খোঁজেন। বিষয়টি মাথায় রেখেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
