নিজস্ব প্রতিবেদক: সদ্য সমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২১ হাজার ৩৯৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ শতাংশ বেশি। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ ঋণ বিতরণের নতুন লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, যা সমাপ্ত অর্থবছরের তুলনায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা বা ছয় দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লিঋণ কার্যক্রম ও নীতিমালা ঘোষণা করেন ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক অশোক কুমার দে, কৃষিঋণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মনোজ কান্তি বৈরাগীসহ কৃষিঋণ বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কৃষি ও পল্লিঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের জন্য ৯ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ১১ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষিঋণ বিভাগ জানায়, বিগত অর্থবছরে মোট ৩৯ লাখ ৬২ হাজার ৫০৮ জন কৃষি ও পল্লিঋণ পেয়েছেন, যার মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৭ নারী প্রায় ছয় হাজার ৩০৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লিঋণ পেয়েছেন। ওই অর্থবছরে ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ১৫৩ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ হাজার ৯২ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার আট হাজার ৩৩৯ কৃষক প্রায় ৩০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লিঋণ পেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়েছে, এই ঋণের ৬০ শতাংশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করা হবে শস্য খাতে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত পাবে অন্তত ১০ শতাংশ। বাকি অর্থ কৃষি যন্ত্রপাতি, দারিদ্র্য বিমোচন, ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ, টার্কি পালন ও অন্যান্য খাতে বিতরণ করা হবে। কৃষি খাতে বিতরণের জন্য এবার যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তার মধ্যে ৫২ শতাংশ বিতরণ করবে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক বিতরণ করবে ৩০ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংক বিতরণ করবে ১৫ শতাংশ এবং বিদেশি ব্যাংক বিতরণ করবে তিন শতাংশ ঋণ। ব্যাংকগুলোর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বাইরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড ৯৬১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করবে। ব্র্যাক বিতরণ করবে ৬০০ কোটি টাকা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর বলেন, জুলাই থেকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ হওয়ার কথা। তবে কৃষি ও পল্লিঋণের ক্ষেত্রেও একই হার বিদ্যমান থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
