শেয়ার বিজ ডেস্ক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর নিজেদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত ‘যতটা সম্ভব অ্যাডজাস্ট’ করে এ প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে কিছু সংশোধনী এনে গতকাল বুধবার বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন নিয়ে নিজেদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। খবর বিডিনিউজ।
জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত অবমাননাকে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ হিসেবে যুক্ত করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে এ কমিটি। এ অপরাধের শাস্তি হবে কোটি টাকা জরিমানা ও ১৪ বছরের কারাদণ্ড। কমিটির গতকালের মুলতবি বৈঠকের আগে সংসদীয় কমিটি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দু’দফা বৈঠক করে। ওই বৈঠকে আইনে আরও কিছু ধারা সংশোধনীর সিদ্ধান্ত আসে। সব সংশোধনী এখন একত্রিত করে বিলের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সংসদের আগামী অধিবেশনে বিলের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে বলে কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মতামত ‘যতটা সম্ভব অ্যাডজাস্ট’ করার চেষ্টা করেছে। এছাড়া বিলে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত অবমাননাকে আইনের এখতিয়ারভুক্ত করেছে বলেও জানান তিনি।
গত ২২ মে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হয়ে প্রস্তাবিত আইনের আটটি ধারা নিয়ে নিজেদের আপত্তি তুলে ধরেছিল সম্পাদক পরিষদ। ওই বৈঠকে অ্যাটকো ও বিএফইউজেও নিজেদের আপত্তির কথা তুলে ধরে। পরে গত ৪ জুলাই এসব সংগঠনের সঙ্গে আবারও বৈঠক করে সংসদীয় কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়। গত ২৯ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর থেকে এর সমালোচনা হচ্ছে।
সাংবাদিকরা প্রস্তাবিত আইনটির ৩২ ধারার সমালোচনা করে বলছেন, এর ফলে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হবে। পরে তা সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। খসড়া আইনে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে যেসব দাবি ও আপত্তি তোলা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গে ইমরান আহমদ বলেন, ‘তাদের দাবির মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক মনে করেছি, তা বিবেচনায় নিয়েছি। অযৌক্তিক কোনো কিছু তো বিবেচনা করা যাবে না। আর আমরা তো কোনো ব্যক্তির স্বার্থে আইনটি করছি না যে সবকিছুই বিচেনায় নিতে হবে। দেশ ও জাতির স্বার্থ আমাদের সবার আগে দেখতে হবে।’
সংশোধনীতে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন কি নাÑএ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের চাহিদা মোতাবেক যতটা সম্ভব অ্যাডজাস্ট করেছি। তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য তো আমরা সবকিছু বিসর্জন দিতে পারি না। তবে এটা বলতে পারি, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটিকে আমরা সুন্দর করতে পেরেছি।’ সংসদীয় কমিটি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে নতুন করে আর বসবে না বলেও কমিটির সভাপতি জানান।
সংসদ ভবনে ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।