বাজার গতিশীল রাখতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে

দেশের পুঁজিবাজার বা অর্থনীতির বিভিন্ন খাতগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীল করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। যেমন দেশের পোশাক খাতের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সাল থেকে। দীর্ঘ সময় পর বর্তমানে এ খাত একটি স্থিতিশীল অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এখন এ খাত বিশ্বের দ্বিতীয় রফতানিকারক হিসেবে কাজ করছে। দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে আজকেরই এ অবস্থান তৈরি পোশাক খাতের। যে কোনো দেশের বড় বা টেকসই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিই হচ্ছে ওই দেশের পুঁজিবাজার। কিন্তু আমাদের পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতিতে সেরকমভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বালি সিকিউরিটিজের পরিচালক সৈয়দ সিরাজ উদ্দৌলা এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক এসএম নাসির উদ্দিন। অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেন হাসিব হাসান।
সৈয়দ সিরাজ উদ্দৌলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী দুজনই চান দেশের পুঁজিবাজার ভালো হোক। আর এ স্বদিচ্ছা নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট সবারই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীনকে নেওয়া হলো। তাদের সঙ্গে চুক্তিও হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি শিগগিরই তারা বাজারে বিনিয়োগ করবে। এরই ধারাবাহিকতায় বাজার এখন ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে। দুই-তিন মাস আগেও বাজারের টার্নওভার ৩০০-৪০০ কোটি টাকার মধ্যে আবর্তিত হচ্ছিল। ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ৮০০-৯০০ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া সরকারের স্বদিচ্ছা থাকায় এবারের বাজেটে ঋণের রেশিও, ব্যাংকের সুদের হার কমানোসহ বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়াতে মানুষ পুঁজিবাজারের দিকে ধীরে ধীরে আগ্রহী হচ্ছে। যদিও এর সুফল বাজেটে পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে না দেখলেও বর্তমানে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত ১৫-২০ দিন যাবৎ বেশকিছু শেয়ারের দর অনেক বেড়ে গিয়েছে। যারা একটু উচ্চ দরে শেয়ার সংগ্রহ করে অপেক্ষা করেছে তারাও মুনাফা পেয়েছে। তাছাড়া লক্ষ্য করলে দেখবেন, বাজারে একেক সময় একেকটি খাত ভালো করছে। কখনও বস্ত্র খাত ভালো করছে তো কখনও জ্বালানি খাত আবার কখনও প্রকৌশল খাতের ভালো গতিবিধি দেখা যাচ্ছে। মানে ধারাবাহিকভাবে একটি গতিবিধি বাজারে দেখা যাচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় আমি মনে করি, বর্তমান বাজার ভালো অবস্থাতেই আছে।
এসএম নাসির উদ্দিন বলেন, দেশের পুঁজিবাজার বা অর্থনীতির বিভিন্ন খাতগুলোকে যদি দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীল করতে হয় তাহলে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। যেমন দেশের পোশাক খাতের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সাল থেকে। দীর্ঘ সময় পর বর্তমানে এ খাত একটি স্থিতিশীল অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এখন এ খাত বিশ্বের দ্বিতীয় রফতানিকারক হিসেবে কাজ করছে। আর এ সফলতা কিন্তু রাতারাতি হয়নি। দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে আজকেরই এ অবস্থান তৈরি পোশাক খাতের। কাজেই যে কোনো দেশের বড় বা টেকসই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিই হচ্ছে ওই দেশে পুঁজিবাজার। কিন্তু আমাদের পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতিতে সেরকমভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাজারের সাময়িক ভালো গতিবিধি দেখে খুশি হওয়ার কিছু নেই। এটিকে একটি স্থিতিশীল বা শক্তিশালী বাজার হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের বাজারের আকার অনেক বড় করতে হবে। দেশের পুঁজিবাজারের আকার অনেক ছোট, যে কারণে এটিকে খুব সহজেই ম্যানুপুলেট বা কারসাজি করা যায়। এখানে বিভিন্ন পণ্য এনে বাজারকে বিনিয়োগ উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিবেশী ভারতের পুঁজিবাজার আজকে কোথায় চলে গেছে। আমাদের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কেন এটির আধুনিকায়ন করছে না। প্রধানমন্ত্রী যদি পুঁজিবাজারের দিকে একটু নজর দেন এবং তিনি যদি বাজারের স্থিতিশীলতার নির্দেশ দেন তাহলে তা হতে বাধ্য।

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০