নিজস্ব প্রতিবেদক: উভয় পুঁজিবাজারে গতকাল সপ্তাহের শেষদিনে নেতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে উভয় বাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করে তোলে, কিন্তু বেলা ১টার পর হঠাৎ বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক হঠাৎ করেই অনেক নেমে যায়। এরপর বেলা ২টার দিকে কেনার চাপ কিছুটা বাড়লেও শেষ পর্যন্ত সূচককে তা ইতিবাচক করতে পারেনি। লেনদেন শেষে প্রধান সূচক ১৪ পয়েন্ট নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। সেইসঙ্গে কমে যায় লেনদেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫০ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও লেনদেন ও শেয়ারদরে একই চিত্র লক্ষ করা যায়।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২৬ শতাংশ কমে পাঁচ হাজার ৩০৫ দশমিক ১৭ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক চার দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে এক হাজার ২৫৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস ৩০ সূচক চার দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ কমে এক হাজার ৮৯০ দশমিক ৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন কমে তিন লাখ ৮৩ হাজার ২২৩ কোটি টাকা হয়। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৮৫৫ কোটি ৬২ লাখ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এদিন ২১ কোটি ৬১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫৫টি শেয়ার এক লাখ ৭৯ হাজার ১৩৮ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৭টির, কমেছে ১৭০টির, অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টির দর।
গতকালও টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে অ্যাকটিভ ফাইন। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর বেড়েছে ৮০ পয়সা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিএস কেব্লসের ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল বিডি থাই, ড্রাগন সোয়েটার, ফরচুন সুজ, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মুন্নু সিরামিক, প্যাসিফিক ডেনিমস, সায়হাম টেক্সটাইল ও ইফাদ অটোস। সর্বোচ্চ সংখ্যক শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে বিডি থাই। কোম্পানিটির ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬৯টি শেয়ার ২৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানে ছিল প্যাসিফিক ডেনিমস, এ্যাকটিভ ফাইন, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সায়হাম টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ, নূরানী ডায়িং, ড্রাগন সোয়েটার, ফু ওয়াং ফুড ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং। ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এরপরে ফরচুন সুজের দর সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ, সায়হাম কটনের দর সাত দশমিক ১৮ শতাংশ, সায়হাম টেক্সটাইলের দর ছয় দশমিক ৪৮ শতাংশ ও বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের দর ছয় দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি থাই, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নূরানী ডায়িং ও আইটি কনসালটেন্টস দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে অবস্থান করে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ দর কমে কেডিএস এক্সেসরিজ দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে। এরপর আট দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমেছে জুট স্পিনার্সের। লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের দর কমে আট দশমিক ৩১ শতাংশ, বিডি অটোকারের দর আট দশমিক ১৭ শতাংশ এবং মুন্নু সিরামিকসের দর সাত দশমিক ৩৩ শতাংশ কমেছে।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১৬ দশমিক ৭২ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমে ১৬ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১০টির, কমেছে ১১২টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩০টির দর।
সিএসইতে এদিন ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৫ কোটি ৭৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ফিনিক্স ফিন্যান্স। কোম্পানিটির তিন কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরে ড্রাগন সোয়েটারের দুই কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এছাড়া গ্রামীণফোনের এক কোটি ৮০ লাখ, লাফার্জহোলসিমের এক কোটি ৬০ লাখ, অ্যাকটিভ ফাইনের এক কোটি ৫৭ লাখ, বিডি থাইয়ের এক কোটি ৪০ লাখ, ফরচুন সুজের এক কোটি ১৯ লাখ, প্যাসিফিক ডেনিমসের এক কোটি ১১ লাখ, আইটি কনসালটেন্টসের এক কোটি ১০ লাখ ও বিবিএস কেব্লসের ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান শেষে পতন
