সড়কে ঝরে গেল দুই শিক্ষার্থীর প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় একই প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১২ জন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘাতক বাসচালক ও তার সহকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে এই সড়কে অন্তত তিন ঘণ্টার জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, মিরপুর থেকে আবদুল্লাহপুরগামী জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের কাছে শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। এ সময় সেখানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। অনেকে রাস্তা পার হচ্ছিল। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী প্রাণ হারায়। গুরুতর আহত অবস্থায় এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, ঘটনাস্থলের পাশেই শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ। ঘটনার সময় ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তা পার হচ্ছিল। অনেকে বাসের জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস এলে শিক্ষার্থীরা তাতে ওঠার চেষ্টা করে। সে সময় জাবালে নূর পরিবহনের আরেকটি বাস বাঁ পাশ দিয়ে ঢুকে দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষার্থীরা এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এবং কয়েকটি যানবাহন ভাঙ্চুর করে।
নিহত শিক্ষার্থী দুজনের নাম জানা গেছে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক সগির মিয়া জানান, নিহত একজনের নাম আবদুল করিম, সে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী দিয়া খানম ওরফে মিম। সে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সগির মিয়া আরও জানান, গুরুতর আহত একজনকে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আরও ১২ জন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে তারা শঙ্কামুক্ত। নিহত ছাত্রীর নাম নিশ্চিত করে তার বান্ধবীরা জানিয়েছে, দিয়ার বাড়ি মহাখালী দক্ষিণপাড়ায়।
এদিকে সহপাঠী নিহত হওয়ার খবরে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। তারা রাস্তায় এসে গাড়ি ভাঙ্চুর করে, একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে মিরপুর-বনানী থেকে বিমানবন্দর ও বিমানবন্দর থেকে মিরপুর-বনানী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিকাল ৩টায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে।
এ বিষয়ে ডিএমপির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবদুল আহাদ বলেন, সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে বেলা ৩টার দিকে তারা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে বাসচালক ও তার সহকারীকে (হেলপার) পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০