বিশ্বের পথে একাকী – পর্ব: ছয়

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ভেইল শহরের বাসিন্দা জেনিফার। তার মা ছিলেন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট, বাবা এভিয়েশন কর্মকর্তা। কর্মসূত্রে তার জীবনের অনেক সময় কেটেছে ভ্রমণ করে, বিশেষ করে উড়োজাহাজে চড়ে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর বিশ্বের চার মহাদেশের ৯টি দেশ তিনি ভ্রমণ করেছেন একাকী। আজ থাকছে তার উগান্ডা ভ্রমণের গল্প

উগান্ডা: অক্টোবর ২৮, ২০১০
ছোটবেলায় চিড়িয়াখানায় গিয়েছি অনেকবার। কতবার যে জাদুঘরে গিয়েছি, তার ইয়ত্তা নেই। আফ্রিকায় এসে মনে হচ্ছে জীবন্ত চিড়িয়াখানায় এসে গেছি। এত বৈচিত্র্যময় একটি মহাদেশ! উগান্ডার এনটেবে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের রানওয়েতে আমাদের বহনকারী উড়োজাহাজটি স্পর্শ করতেই মনে হলো জীবন্ত জাদুঘরে এসে গেছি। ভাবছি, কখন দেখতে পাব বুশম্যান, সিংহ, হাতি প্রভৃতি।
উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা বেশ বড় শহর। বিমানবন্দর থেকে হোটেলে যাচ্ছি ট্যাক্সিতে চড়ে। দেখছি পথঘাট, ভবন, মানুষ প্রভৃতি। আফ্রিকার অন্য বৃহৎ শহরগুলোর তুলনায় এখানকার আকাশচুম্বী ভবনগুলো নিয়ম মেনে নির্মাণ করা হয়েছে বলে মনে হলো। তবে জমকালো নয় শহরটি। অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলেও রঙিন মনে হয়নি শহরটিকে। মজার বিষয়, রাজধানীর রাস্তায় তেমন যানজট চোখে পড়েনি। একটি গাড়ির সঙ্গে আরেকটির ঘেঁষাঘেঁষি করে চলাচলও চোখে পড়েনি। এসব দৃশ্য আফ্রিকার সড়কগুলোয় বিরল। তবে চিরাচরিত গতি আছে। রাস্তার পাশে ফুটপাত নেই বললেই চলে। মনে হয় অর্ধ শতাব্দী আগে ফুটপাত ছিল, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। হাজার হাজার গর্ত, কাদা; হাঁটাই মুশকিল। এসব ছাড়া কাম্পালাকে আমার দারুণ লেগেছে।
কাম্পালার খাবার ভীষণ বৈচিত্র্যময়, দারুণ! আবহাওয়া চমৎকার। জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ। অধিবাসীদের মনে হয়েছে বন্ধুভাবাপন্ন। বেশ সাহসী তারা। এ রাজধানীতেই নিজের পা’কে টোপ বানিয়ে বিষধর অজগর সাপ ধরতে দেখেছি পরদিন সকালে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। হোটেলের একটু সামনে যেতেই দুজনকে গর্তের মধ্যে পা দিয়ে গুঁতোগুঁতি করতে দেখি। বুঝতে পারছি সাপ ধরার চেষ্টা করছে। দু’চার মিনিটের মধ্যে বড় একটা সাপ ধরে তারা। পুরো ঘটনাটির ভিডিওচিত্র ধারণ করি।
যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাপটি নিয়ে যাচ্ছিল, দেখে তাদের একই পরিবারের মনে হচ্ছিল। গত সপ্তাহে মাত্র তিন দিনের জন্য নিউইয়র্কে গিয়েছিলাম, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। হঠাৎ কেন জানি না বাড়িতে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে। একটু নস্টালজিয়ায় ভুগছিলাম। শুনেছি এখানে মানুষখেকো রয়েছে। তাদের না দেখে কীভাবে দেশটি ছাড়ি সে ভাবনাও মনে উঁকি দিচ্ছিল।

ভাষান্তর: রতন কুমার দাস

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০