পতনের বাজারে বিনিয়োগে ঝুঁকিমুক্ত তিন খাত

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পতনের ধাক্কায় সাম্প্রতিককালে তালিকাভুক্ত প্রায় সব খাতের কোম্পানির শেয়ারদর নিম্নমুখী রয়েছে। দর কমে যাওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী নিরাপদ বিনিয়োগের তালিকায় রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। এই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে তালিকাভুক্ত তিন খাতের কোম্পানি। খাতগুলো হচ্ছে ব্যাংক, জ্বালানি ও শক্তি এবং বিমা। এসব প্রতিষ্ঠানের গড় শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই-রেশিও বর্তমানে ১৪-এর নিচে অবস্থান করছে, যা নিরাপদ বিনিয়োগের সবুজ সংকেত। ডিএসই সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিনিয়োগের অনুকূলে থাকা তিনটি খাতই পুঁজিবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাজার মূলধনে এসব খাতের অবদানও অনেক। কিন্তু দীর্ঘদিন বাজার মন্দা থাকায় এসব শেয়ারের চাহিদায় ভাটা পড়েছে, যার জের ধরে কমে গেছে এসব শেয়ারদর। আর শেয়ারদর কমে যাওয়ার কারণে এর মূল্য আয় অনুপাতও কমে গেছে। দেখেশুনে বিনিয়োগ করলে এসব খাত থেকে ভবিষ্যতে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব বলে উল্লেখ করেন তারা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, নিরাপদ বিনিয়োগে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাজারের শক্তিশালী খাত ব্যাংক। বর্তমানে এই খাতের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ৯ দশমিক ৩। পরের অবস্থানে রয়েছে বিমা খাত। এ খাতের গড় পিই-রেশিও অবস্থান করছে ১০ দশমিক পাঁচ-এ। পরের অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও শক্তি খাত। এ খাতের পিই-রেশিও ১৩ দশমিক আট।
সম্প্রতি সবচেয়ে কমে গেছে ব্যাংক খাতের কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা। ব্যাংক খাতে নানা অনিয়মের কারণে এমনিতেই এসব শেয়ারের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ অর্থবছরে ভালো লভ্যাংশ না আসা, সেইসঙ্গে প্রথম প্রান্তিকে অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফা কমে যাওয়ায় এসব শেয়ারের প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি স্থায়ী হবে না বলে অভিমত প্রকাশ করেন তারা।
সাধারণত ১৫-এর নিচে পিই-রেশিও থাকলে সেই শেয়ারকে ঝুঁকিমুক্ত ধরা হয়। পিই রেশিও ২০ পার করলে সেই শেয়ার ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর ৪০-এর ওপরে পিই-রেশিও গেলে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি এড়াতে ওই শেয়ারের মার্জিন ঋণ সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এই বিবেচনায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে ‘এন’ ক্যাটেগরির শেয়ার। বর্তমানে এসব কোম্পানির গড় পিই রেশিও অবস্থান করছে ৪০-এর ওপরে। লেনদেনের শুরুতেই এসব শেয়ার ক্রয় করার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে, যার জের ধরে শেয়ারগুলো অতিমূল্যায়িত হচ্ছে, যে কারণে প্রায় সব সময়ই এসব শেয়ারের গড় পিই রেশিও ৪০-এর ওপরে অবস্থান করে।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, এখন ব্যাংকসহ তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বিনিয়োগের অনুকূলে রয়েছে। তবে এর মধ্যে কিছু ভালো শেয়ারের পিই-রেশিও খুবই কম। এর মধ্যে কিছু শেয়ারের রেশিও সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে গেছে। দেখেশুনে এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করলে এখান থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ বাজারের বর্তমান চিত্র পরিবর্তিত হলে এসব কোম্পানির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।

 

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০