নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেছেন, পুঁজিবাজার একটি সংবেদনশীল জায়গা। এখানে যে কোনো মন্তব্যই বাজারকে প্রভাবিত করে। গতকাল বিএসইসিতে ব্রোকারেজ হাউজ অনুমোদিত প্রতিনিধিদের জন্য পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজের অনুমোদিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারের সঙ্গে সংযোগ ঘটে। এদের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বাজার সম্পর্কে জানতে পারে এবং তাদের লেনদেন সম্পন্ন করে। আইপিও থেকে শুরু করে সব কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগকারীদের সেতুবন্ধনের মতো কাজ করে। এজন্য অনুমোদিত প্রতিনিধিদের আইনকানুন জানা ও প্রয়োগ করা জরুরি।
তিনি বলেন, আইনকানুন সম্পর্কে আরও স্পষ্টভাবে অবগত করতে ভবিষ্যতে অনুমোদিত প্রতিনিধিদের জন্য বিএসইসি বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের আয়োজন করবে। বিনিয়োগকারীরা বাজারের মূল শক্তি হলেও তাদের গাইড করার দায়িত্ব অনুমোদিত প্রতিনিধিদের।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা, খন্দকার কামালুজ্জামান ও ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান।
ড. স্বপন কুমার বালা বলেন, পুঁজিবাজারের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত মূল যে কর্মকাণ্ড, তা অনুমোদিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তবে টেলিফোনে প্রাপ্ত আদেশ বাস্তবায়ন করা এবং খালি ফরমে বিনিয়োগকারীদের স্বাক্ষর নেওয়ার কর্মকাণ্ড অনুমোদিত প্রতিনিধিদের নৈতিকতাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে। সব অনিয়ম থেকে বিরত থাকার জন্য আইনকানুনগুলো সম্পর্কে বিশদভাবে অবগত থাকতে হবে। এছাড়াও অনুমোদিত প্রতিনিধিদের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ছাড়া লেনদেন করা যাবে না। এজন্য অনুমোদিত প্রতিনিধিদের নৈতিকভাবে দৃঢ় ও দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আন্তরিকভাবে লেনদেন পরিচালনা করলে বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষিত হবে।
সেমিনারে বিএসইসির কমিশনার খন্দকার কামালুজ্জামান বলেন, পুঁজিবাজারে সবকিছু আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সবাই যেন নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে দায়িত্ব পালন করেন। কমিশন যে আইন বিধিবিধান দিয়ে পরিচালিত হয়, সেই সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সম্পর্কে জেনে-বুঝে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। আইনের আলোকে যত বেশি নিজেদের পরিচালনা করা যায়, সেবা গ্রহণকারীরা তত বেশি উপকৃত হন। বিএসইসি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্য করে এগিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে যেসব বাধা আসবে, সেগুলো কীভাবে অতিক্রম করা যায়Ñসে দিকনির্দেশনা এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় থাকবে।
অন্যদিকে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, একজন অনুমোদিত প্রতিনিধি একটি ব্রোকারেজ হাউজের চালিকাশক্তি। যারা অনুমোদিত প্রতিনিধি হিসেবে পেশা শুরু করেছেন, তাদের ভবিষ্যৎ যে খুব ভালো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান যে অবস্থা, তাতে সামনে অগ্রসর হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে সততা ও নিষ্ঠাই এ পেশার সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম।
তিনি আরও বলেন, ব্রোকার হাউজগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও একটি হাউজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব অনুমোদিত প্রতিনিধিদের। একটি ভুলেই প্রতিষ্ঠানের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। এটি নিরসনে বিএসইসিও দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য সচেতন ও শিক্ষিত বিনিয়োগকারী গড়ে তোলা।
