সড়কে গাড়ি নেমেছে সীমিত আকারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে হঠাৎ ঢাকায় বাস-মিনিবাস চালানো বন্ধ করে দেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। পরে দূরপাল্লার পরিবহন সেবাও বন্ধ করে দেয় মালিকরা। তবে অঘোষিত এ ধর্মঘট গতকাল প্রত্যাহার করে নিয়েছে পরিবহন মালিকরা।
গতকাল সকাল থেকে রাস্তায় বাস নামাতে শুরু করলেও তা ছিল সংখ্যায় কম। এতে সকালে ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে বহু মানুষকে যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। বাসে উঠতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে অফিসগামী যাত্রীদের। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে রাজধানীতে চলাচলরত বাস-মিনিবাসের সংখ্যা।
এদিকে গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাসও ছেড়ে গেছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামে আহ্বান করা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ গত রোববার রাতেই জানিয়েছিলেন, সারা দেশের পরিস্থিতি এখন তাদের কাছে নিরাপদ বলেই মনে হচ্ছে। এ কারণে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে গতকাল সোমবার সকাল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে বাস চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
উত্তরা ৭ নং সেক্টরের বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানিয়েছেন, সংখ্যায় কম হলেও সকালে বেরিয়ে তারা বাসের দেখা পেয়েছেন। নিকেতনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, গত রোববার রাতে খবর পড়ছিলাম, সোমবার সড়কে বাস চলবে। কিন্তু বাসের সংখ্যা তো খুবই কম।
লাব্বাইক পরিবহনের একটি বাসে করে সকালে শনিরআখড়া থেকে ফার্মগেটে আসেন ইয়াসিন হোসেন। তিনি বলেন, খুব যুদ্ধ করে বাসে উঠতে হয়েছে। সকালে অনেকেই বাস পায়নি। তবে বিকালে বাসের সংখ্যা বাড়বে বলে জানিয়েছেন চালকরা।
এদিকে গতকাল সকালে গুলিস্তান-নতুনবাজার রুটের বন্ধু পরিবহনের মিনিবাসের সংখ্যাও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ছিল কম। উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, মিরপুর, মোহাম্মদপুরেও বাস নেমেছে। তবে মগবাজার, মহাখালী, গুলশান এবং রামপুরা, বাড্ডার রাস্তায় বাস ছিল হাতে গোনা।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘সড়ক নিরাপদ রয়েছে, এমন আশ্বাসে নিশ্চিত হয়ে সড়কে গাড়ি নামিয়েছি। আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকেও দূরপাল্লার গাড়ি ছাড়ছে। সকাল থেকে যাত্রীর চাপ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে ভোর ৫টায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। অন্যান্য টার্মিনালের চিত্রও একই।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই ঢাকায় বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর রাজপথ অচল করে টানা আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের মধ্যে বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুরের শিকার হয়। এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন মালিক-শ্রমিকরা। বিভিন্ন স্থানে পরিবহন শ্রমিকদের সড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি আটকাতেও দেখা যায়। ফলে যাত্রীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা বিক্ষোভের কারণে ‘নিরাপত্তার’ নামে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। এর মাধ্যমে জনভোগান্তি থেকে মুক্তি পায় চট্টগ্রামবাসী। সোমবার সকাল থেকে নগর ও জেলায় গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়।
চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে গাড়ি চলাচল শুরু করেছে।
এদিকে সোমবার সকাল থেকে নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, দুই নম্বর গেট, কালুরঘাট, আন্দরকিল্লা, নিউ মার্কেট, কাজিরদেউরি, অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতুসহ বিভিন্ন এলাকায় গণপরিবহন চলাচল করে। বিভিন্ন কাউন্টার থেকে দূরপাল্লার বাসও ছেড়ে যায়। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, রিকশাসহ বিভিন্ন যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও গণপরিবহনের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকাংশে কম ছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০