নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন বিজনেস। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন তৈরি করে দিন কর্মসংস্থানের পথ
শরীফুল ইসলাম পলাশ: আপনি কি নিজের ভাগ্য বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চান? অভিজ্ঞতার অভাব আর নির্ভরযোগ্য জনবল না পেয়ে বারবার উদ্যোগ নিয়েও পিছিয়ে যাচ্ছেন? তাহলে আজকের এ লেখা আপনার জন্য।
ধরে নিচ্ছি বিউটি পার্লার কিংবা হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান করার আগ্রহ রয়েছে আপনার। তবে কাজের জন্য নির্ভরযোগ্য কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। যারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তাদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য চাওয়া-পাওয়াও অনেক। এমন সমস্যার সমাধান হিসেবে সমাজের পিছিয়ে পড়া তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া জনগোষ্ঠী থেকে কাউকে বেছে নিতে পারেন। নৃ-গোষ্ঠীর কাউকে রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে একদিকে আপনি নিজের মতো করে জনবল গড়ে নিতে পারছেন। অন্যদিকে বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগও তৈরি হচ্ছে।
দেশের হিজড়া ও নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে অনেকেই হস্তশিল্প কিংবা বিউটি পার্লারের কাজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। অনেকে সরকারের নানা প্রকল্পের মাধ্যমে এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কেউ কেউ স্বল্প পরিসরে কাজও করছেন। কিন্তু পুঁজি ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে স্বাবলম্বী হতে পারছেন। আপনি চাইলে কম ঝামেলায় এমন কাউকে বেছে নিতে পারেন। তাদের নিয়ে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহজেই কাক্সিক্ষত ব্যক্তিকে খুঁজে পাবেন। হিজড়া ও নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে অসুবিধার তুলনায় সুবিধাই বেশি। যেমন তাদের পারিশ্রমিক তুলনামূলক কম, তারা কাজের ব্যাপারে আন্তরিক। এখানে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে কাজ করতে দিলে তারা আপনার প্রতি সবসময়ই কৃতজ্ঞ থাকবে।
আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এসব কর্মী তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পেরেছেন। চারপাশে তাকালে অনেক নজির দেখতে পাবেন। সে তুলনায় হিজড়া জনগোষ্ঠী অনেকটাই পিছিয়ে আছে। বিশ্বের নানা দেশে হস্ত ও কুটির শিল্পের কর্মী, বিউটি পার্লার কিংবা মিডিয়া হাউজের মেকআপ আর্টিস্ট এমনকি বিমানবালা হিসেবেও তারা কাজ করছেন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কেউ কেউ খুব ভালো কাজ করছেন। অনেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আপনি হস্তশিল্প ও বিউটিশিয়ান হিসেবে তাদের যোগ্যতাকে কাজে লাগাতে পারেন। এতে বিকাশমান ওই দুই শিল্পের সঙ্গে আপনিও এগিয়ে যাবেন।
অথচ সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তারা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না। আমরা আন্তরিকভাবে চাইলে দেশের ‘বোঝা’ হিসেবে স্বীকৃত জনগোষ্ঠীকে ‘সম্পদে’ পরিণত করে তুলতে পারি। একজন সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে এলে তার দেখানো পথে অনেকেই এগিয়ে আসবেন।
Add Comment