আজ বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৭৮ সালের এই দিনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার স্ত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে দলটির চেয়ারপারসন রয়েছেন জেলে। এছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও দণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থায় যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ফলে চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ছাড়াই এবার অন্যরকম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে বিএনপি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো আজ দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে দলটি। এজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতিও পেয়েছে বিএনপি। এ সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে দলটির নেতাকর্মীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। সেখানে কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি ও আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে যাত্রা শুরু বিএনপির। এরপর একাধিকবার ক্ষমতায় যাওয়া দলটি সর্বশেষ ২০০৬ সালের অক্টোবর ক্ষমতা ছাড়ে। তখন থেকেই কঠিন সময় পার করছে দলটি। মাত্র চার মাস পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলেও তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে দলটি। ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম), খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকারসহ নানা বিষয়ে দাবি এখনও পূরণ হয়নি বিএনপির। এরই মধ্যে আজ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে দলটি। এজন্য প্রতিষ্ঠার পর বিএনপি বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভিত্তিতে ১৯৭৮ সালে রমনা রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি গঠন করেন তখনকার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এর আগেই অবশ্য জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে আরেকটি দল প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে বিএনপি প্রতিষ্ঠার সময় দলটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। জিয়াউর রহমান ছিলেন বিএনপির সমন্বয়ক ও প্রথম চেয়ারম্যান। অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছিলেন প্রথম মহাসচিব।
নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান প্রথমে ১৮ জন সদস্যের নাম এবং পরে ৭৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। পরের বছর ১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। ২০৭টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে দলটি। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে বিপথগামী একদল সেনাসদস্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ও নেতাকর্মীদের অনুরোধে দলের হাল ধরেন তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। ১৯৮৪ সালের ১০ মে চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন তিনি। এখনও তিনি দলের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিএনপি তৎকালীন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয় বিএনপি। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি জয়লাভ করে। এছাড়া সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দল হিসেবে সংসদে যায়। ১৯৯৯ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত হয় চারদলীয় জোট। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় ক্ষমতায় যায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। খালেদা জিয়া পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন। পরে ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিএনপি।
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল বিএনপি। এর আগে ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থা ও খালেদা জিয়ার কারারুদ্ধ হওয়ার সময় থেকেই সংকটে পড়ে দলটি। সে অবস্থা থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেনি বিএনপি।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০