গাড়ির নিরাপত্তা লাখ ছাড়িয়েছে এনট্র্যাকের গ্রাহক

ব্যক্তিগত যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সেবা। এ খাতের প্রতিষ্ঠান এনআইটিএস সার্ভিস লিমিটেড বলছে, গত ৯ বছরে তাদের ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সেবা ‘এনট্র্যাক’-এর গ্রাহকসংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
এনআইটিএস সার্ভিস লিমিটেড
নিটল-নিলয় গ্রুপের একটি প্রযুক্তিসেবা প্রতিষ্ঠান। বিটিআরসির লাইসেন্স নিয়ে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের বাজারে গাড়ির ট্র্যাকিং সেবা দিচ্ছে তারা।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, হাল্কা কিংবা ভারী যে কোনো ধরনের যানবাহনের নিরাপত্তা ‘এনট্র্যাক’ দিয়ে নিশ্চিত করা সম্ভব। এই প্রযুক্তিতে গাড়ির অবস্থান জানা যায় তাৎক্ষণিকভাবে। ফলে গাড়ি চুরির আশঙ্কা থাকে না। কোনোভাবে গাড়ি হাতছাড়া হলেও তা খুঁজে বের করা যায়।
এনআইটিএসের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা অরূপ কুমার চাকী জানান, এনট্র্যাক ডিভাইসযুক্ত গাড়িতে মালিক চলার পথ (রুট) নির্ধারণ করে দিতে পারেন। তার অনুপস্থিতিতে গাড়ি নির্ধারিত রুট না মেনে অন্য পথে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল ফোন কিংবা ডেক্সটপে চলে আসবে অ্যালার্ট।
এই ডিভাইসের কারণে চালক চাইলেও বেপরোয়া গতি তুলতে পারবেন না। ডিভাইসে যে গতিসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, তার ব্যত্যয় ঘটলেই সেফটি অ্যালার্ট পাওয়া যাবে। মালিক তখন রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে থামাতে পারবেন ইঞ্জিন। সমস্যার সমাধান হলে আবার চালু হবে গাড়ি। নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে গাড়িটি কতবার পাঁচ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়িয়েছিল, গাড়ির ইঞ্জিন চালু আছে নাকি বন্ধ, তা সংরক্ষণ করে এনট্র্যাক। প্রতিমুহূর্তের তথ্য, গন্তব্যে যেতে কতটুকু জ্বালানি খরচ হয়েছে প্রভৃতি তথ্য সংরক্ষিত হয় এনট্র্যাকের ক্লাউড স্টোরে। যে কোনো সময় চাইলে এসব তথ্য জেনে নিতে পারেন গাড়ির মালিক।
অরূপ কুমার চাকী আরও জানান, এনট্র্যাকে আছে গাড়ির ভেতরের ভিডিও ও অডিও ধারণের সুবিধা। ফলে গাড়ির ভেতরে কতজন আছে এবং তাদের কথোপকথন দূর থেকে দেখা ও শোনা সম্ভব। কারও যদি একাধিক গাড়ি থাকে, তাহলে সেগুলোর তদারকি ও রক্ষাণাবেক্ষণও এই সিস্টেম সহজ করে দেবে বলে জানিয়েছেন এনআইটিএস কর্মকর্তারা।
এনট্র্যাকের বিপণন কোম্পানি এনরিচের রয়েছে নিজস্ব কলসেন্টার ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের কাজটি তারাই করেন। গাড়ির সঙ্গে মালিকের যোগাযোগ রক্ষা করতে যে কোনো অপারেটরের মোবাইল ফোন সিম ব্যবহার করা যায়।
এনআইটিএস জানিয়েছে, বর্তমানে এনট্র্যাক সংযোগের জন্য তারা ফি নিচ্ছেন সাড়ে ৯ হাজার টাকা। আর মাসিক সার্ভিস চার্জ ৫০০ টাকা। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও গাড়ির নিরাপত্তার অনলাইন ব্যবস্থাপনা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এতে কোনো কোম্পানির গাড়ি মাসে কতটুকু পথ চলেছে, কী পরিমাণ পণ্য পরিবহন করেছে, কোন কোন এলাকায় গেছে এসব তথ্য পাওয়া সহজ হয়।
শাহ সিমেন্ট, কেএসআরএম স্টিল, ক্রাউন সিমেন্ট, বসুন্ধরা গ্রুপ, বিএসআরএমসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এই সেবাটি নিচ্ছে।
নাভানা লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন) মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন জানান, তাদের কোম্পানিও ফ্লিট ম্যানেজমেন্টের জন্য এনট্র্যাক ব্যবহার করছে। এটি ব্যবহারের ফলে মনিটরিং ও রিপোর্টিং অনেক সহজ হয়েছে, ফ্লিট ম্যানেজমেন্টের সক্ষমতাও বেড়েছে। এনট্র্যাকের মতোই এম২এম কমিউনিকেশনস, বিডিকম স্মার্ট ট্র্যাকার, জিপি ভিটিএস-সহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ট্র্যাকিং সার্ভিস রয়েছে। বেঙ্গল মিটের ম্যানেজার (অটোমোবাইল অ্যান্ড পাওয়ার) মো. সোহরাব আলী জানান, আমরাও গাড়িবহরের ব্যবস্থাপনায় ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেম
ব্যবহার করছি। ফলে আমাদের গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সময় ও খরচ বাঁচানো সহজ হচ্ছে।
অরূপ কুমার চাকীর মতে, ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট কিংবা একসঙ্গে অনেক গাড়ির ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক করতে আমাদের সফটওয়্যার টিম কাজ করছে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ফিচারের সফটওয়্যার টুল দেওয়া হচ্ছে। ট্র্যাকিং ও নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য আমরা ইউরোপের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০