নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই দেশত্যাগ করতে পারবে কাতার প্রবাসীরা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: কাতারে কর্মরত বিদেশি শ্রমিক ও কর্মীদের বেশিরভাগই এখন থেকে ‘এক্সিট পারমিট’ বা প্রস্থান অনুমতি ছাড়াই ছুটিতে বা স্থায়ীভাবে দেশে ফিরতে পারবে। গত মঙ্গলবার দেশটির সরকার অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য বিতর্কিত ভিসা ব্যবস্থা বাতিল করার পর এ সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আগে কাতার ত্যাগে নিয়োগকর্তার অনুমতি নেওয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা ছিল। শ্রমিক অধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে এ আইনের সংশোধন দাবি করে আসছিলেন। নতুন আইনে নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই দেশে ফিরতে পারবে কাতার প্রবাসীরা। খবর বিবিসি।
কাতারের এ উদ্যোগকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে আখ্যায়িত করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও। আইএলওর দোহা অফিসের প্রধান হাওতান হোমায়ুনপোর এক বিবৃতিতে জানান, আইএলও বাসস্থান আইনের সংশোধনকে স্বাগত জানায়। এ আইনের সংশোধন কাতারে অবস্থানরত প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর প্রত্যক্ষ ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রতিবেদনমতে, কাতারে গমন, বহির্গমন ও প্রবাসীদের বসবাসের বিষয়সংক্রান্ত আইনের কিছু ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোন ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়নি।
গ্যাসসমৃদ্ধ কাতারে ২০ লাখের বেশি প্রবাসী শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখই এশীয়। দেশটির মোট শ্রমিকের ৪০ ভাগ নির্মাণকাজে জড়িত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের দেশত্যাগের বিষয়টি ছাড়াও নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো ও অভিযোগ জানানোর পদ্ধতির বিষয়েও পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে কাতার।
‘বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২’ কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে কাতারে উন্নয়নমূলক কাজের ধুম পড়ে গেছে। বিশ্বকাপ ঘিরে এসব উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাপক সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে দেশটি। বিশ্বকাপ আয়োজনের ঠিক আগে কাতারের এ পদক্ষেপ প্রবাসী শ্রমিকদের বেশ আকৃষ্ট করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, কাতার, সৌদি আরব, লেবানন, জর্ডান, বাহরাইন, ইরাক, কুয়েত, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে তদারক ও অভিবাসী শ্রমিকদের দেখভালের জন্য যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে তাকে বলা হয় ‘কাফালা সিস্টেম’। একে ইংরেজিতে স্পন্সরশিপ সিস্টেম বলা হয়। এ ব্যবস্থার অধীনে অদক্ষ সব শ্রমিকের কাজের জন্য প্রয়োজন হয় স্পন্সর। বিশেষ করে সেটা হতে পারে তাদের নিয়োগকারী।
এসব শ্রমিকের ভিসা ও তার আইনগত অবস্থানের জন্য দায়ী থাকে ওই নিয়োগকারী বা স্পন্সর। তবে অভিযোগ রয়েছে, অনেক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পাসপোর্ট তাদের কব্জায় নিয়ে নেয়। অনেক শ্রমিককে নির্যাতন করা হয়। এমনকি তারা যাতে আইনি ব্যবস্থা নিতে না পারে, সেজন্য তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেয় নিয়োগকারীরা। এসব সমস্যার তীব্র সমালোচনা করে আসছে আন্তর্জাতিক সব মানবাধিকার সংস্থা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০