শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম বড় অনলাইনভিত্তিক কোম্পানি আলিবাবা ডটকমের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান জ্যাক মা তার পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। পদ ছাড়লেও তিনি আলিবাবার পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন। সাবেক এ শিক্ষক শিক্ষা নিয়ে জনসেবামূলক কাজে নিজেকে সঁপে দেওয়ার লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামীকাল সোমবার তার বয়স ৫৪ বছর হবে। এদিনই তিনি পদত্যাগ করবেন। খবর রয়টার্স।
১৯৯৯ সালে জ্যাক মা কয়েকজনের সঙ্গে মিলে আলিবাবা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ৪০ হাজার কোটি ডলারের বাজার রয়েছে। এর মধ্যে অনলাইন বিক্রি, চলচ্চিত্র তৈরি, ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবসা রয়েছে। জ্যাক মা’র ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ চার হাজার কোটি ডলার। ২০১৭ সালে ফোর্বসের দেওয়া চীনের ধনীদের তালিকায় তিনি তৃতীয়। তিনি শিক্ষক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন। ছিলেন চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝিজিয়াং প্রদেশের হ্যাংঝোতে শহরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক। হ্যাংঝোতে এক দল বন্ধুর সঙ্গে মিলে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তিনি আলিবাবাকে যাত্রা করিয়েছিলেন।
নিউনিয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক এই ইংরেজির শিক্ষক বলেন, ‘অবসর মানেই একটি যুগের শেষ নয়, বরং আরেকটি যুগের শুরু। আমি পড়াশোনা ভালোবাসি।’
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে জ্যাক মা ব্লুমবার্গ টিভিকে বলেছিলেন, তিনি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ব্যক্তিগতভাবে একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তুলতে চান। বিল গেটসের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বলে জানান তিনি।
জ্যাক মা বলেন, ‘আমি কখনও এতটা সমৃদ্ধ হতে পারব না; কিন্তু আমি যেটা ভালো করতে পারিÑতা হলো আগে আগে অবসরে যেতে পারি। আমি ভাবছি কোনোদিন খুব শিগগির আমি শিক্ষকতায় ফিরে যাব। আমার মনে হয়, আলিবাবার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বের চেয়ে আমি এটি ভালো করতে পারব।’
হাইস্কুলের গণ্ডি কোনোমতে পার করতে পারলেও উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে বিপদে পড়েন জ্যাক। দু-দুবার ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ হন। তৃতীয়বারে কোনোরকমে পাস করে হ্যাংঝু টিচার্স ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। ১৯৮৮ সালে স্নাতক শেষ করতে পারলেও প্রায় ৩০টি চাকরির পরীক্ষায় ফেল করেন। যে চাকরির জন্যই আবেদন করেছেন, সেখানেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। চীনে যখন প্রথম ফাস্টফুড চেইন কেএফসি চালু হয়, তাতে যে ২৪ জন আবেদন করেছিল, তাদের মধ্যে জ্যাক মাও ছিলেন। সেই ২৪ জনের মধ্যে ২৩ জনের চাকরি হলেও জ্যাক মা’র চাকরি হয়নি। ১০ বার চেষ্টা করেও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি তিনি।