দেশে জাপানি বিনিয়োগ গত ১২ বছরে চারগুণ বেড়েছে। তারা দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার জন্য একটি জমিও চেয়েছে। পাশাপশি কোরিয়া ও ভারতের বিনিয়োগও বেড়েছে। এ বিষয়গুলো কিছুদিন পরে দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব রাখবে। এ অর্থনৈতিক উন্নয়নের তুলনায় রাজনীতির প্রভাব খুব বড় ভূমিকা রাখার কথা নয়। কারণ এখানে জাপানিরা আগামী ১০ বছরের হিসাব-নিকাশ করেই আসছে। তাই বিনিয়োগকারীদের বুঝতে হবে, সামনে অর্থনীতিতে একটি বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগামীতে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাও অনেক বেশি। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এম শাহজাহান মিনা এবং বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্টের এমডি রিয়াদ মতিন। অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেন হাসিব হাসান।
এম শাহজাহান মিনা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো নয়। দু-একদিন বাড়ছে কিন্তু অধিকাংশ সময় বাজার ধারাবাহিকভাবে নিচের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অথচ এর মধ্য দিয়েই স্বল্প মূলধনি অনেক কোম্পানির দর অযৌক্তিকভাবে বাড়ছে। কিন্তু বাড়ছে না ভালো কোম্পানিগুলোর দর। উল্টো সেগুলো অনবরত নিচের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আর স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলো নিয়ে যে কারসাজি হচ্ছে তা বোঝাই যাচ্ছে। তবে ভালো শেয়ারগুলোর দর কমার ক্ষেত্রে আমি মনে করি দেশের রাজনীতি অনেকটা দায়ী। কারণ সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে এক ধরনের অস্থিরতার সৃষ্টি হতে পারে যা মানুষ পূর্বে দেখেছে। আর বিনিয়োগকারীরা এটি ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। যে কারণে তারা হয়তো নিজেদের পুঁজির সুরক্ষার জন্য বর্তমানে বিনিয়োগ তুলে নিয়ে অপেক্ষা করছে ভবিষ্যতে কি হয় এ ভেবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো ভালো শেয়ারগুলোর বর্তমানে এ অবস্থা। তাছাড়া যেহেতু পুঁজিবাজারে ভালো শেয়ারগুলোর প্রভাব অনেক বেশি। তাই এদের দর পতনে বাজারের সূচক ও টার্নওভার বাড়ছে না। ফলে দেশে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে এলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করি। তবে আমার মনে হয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের এত ভীত হওয়ার কারণ নেই। যেহেতু আমাদের স্বাধীন দেশ তাই নির্বাচন যেভাবেই হোক না কেন যে কোনো একটি সরকার অবশ্যই থাকবে।
রিয়াদ মতিন বলেন, পুঁজিবাজার একটি সংবেদনশীল জায়গা তা আমরা সবাই জানি। ফলে কোনো সংবেদনশীল তথ্য এলে এখানে তার প্রভাব পড়বে এটা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। তবে বর্তমানে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভালো। বড় বড় অনেক প্রকল্প হচ্ছে এখানে। জাপানি বিনিয়োগ গত ১২ বছরে চারগুণ বেড়েছে এবং তারা দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য একটি জমিও চেয়েছে। পাশাপশি কোরিয়ার বিনিয়োগ বেড়েছে, সঙ্গে ইন্ডিয়ান বিনিয়োগ বাড়ছে। আর এ বিষয়গুলো কিছুদিন পরে দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। ফলে এ অর্থনৈতিক উন্নয়নের তুলনায় রাজনীতির প্রভাব খুব বড় ভূমিকা রাখার কথা নয়। কারণ এখানে জাপানিরা যে বিনিয়োগ করতে আসছে তারা কি আগামী ১০ বছরের হিসাব-নিকাশ না করেই আসছে? অবশ্যই নয় তারা সবকিছু জেনে বুঝেই এখানে আসছে। তাই বিনিয়োগকারীদের এগুলো বুঝতে হবে যে, সামনে অর্থনীতির একটি বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগামীতে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাও অনেক বেশি।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম