শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চীনের রফতানি তুলনামূলক কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ বিস্তৃত হওয়ায় দেশটির রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে পৃথক দুটি সূচকে দেখা গেছে। খবর: এপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত কয়েক দফার শুল্কে চীনা বাণিজ্যে দৃশ্যমান প্রভাব পড়েছে। বৈশ্বিক বাজারে ভোক্তা চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি সাম্প্রতিক সময়ে এমনিতেই চাপে রয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বাণিজ্যযুদ্ধ।
তথ্যমতে, চায়না ফেডারেশনের লজিস্টিক ও পারচেজিংয়ে মাসিক রফতানি ক্রয়াদেশ আগস্টে ছিল ৪৯ দশমিক চার পয়েন্ট। এটি সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ৪৮ পয়েন্টে। ১০০ পয়েন্ট স্কেলের মধ্যে ৫০-এর নিচে থাকলে মনে করা হয় রফতানি খারাপ অবস্থা পার করছে।
ব্যবসায়িক ম্যাগাজিন কাইশিনের এক সূচকে দেখা গেছে, গত দুবছরের মধ্যে নতুন রফতানির হার সবচেয়ে দ্রুত কমছে। এজন্য ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য দ্বন্দ্ব ও শুল্ককে দায়ী করছেন বলে ওই ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে।
সব মিলিয়ে গত মাসে ফেডারেশনের মাসিক পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্সে (পিএমআই) ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম কমে ৫০ দশমিক চার পয়েন্টে পৌঁছেছে। আগের মাসে এ পয়েন্ট ছিল ৫১ দশমিক তিন পয়েন্ট। কাইশিন ম্যাগাজিনের সূচকে পিএমআই পয়েন্ট ৫০ দশমিক ছয় থেকে কমে হয়েছে ৫০।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত তিন দফায় মোট ২৫ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জুলাইয়ে তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নেয় হোয়াইট হাউজ। এরপর গত মাসে দ্বিতীয় দফায় এক হাজার ৬০০ কোটি ডলারের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়। প্রতিশোধস্বরূপ পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে চীন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ‘চীনে মার্কিন প্রযুক্তি ও মেধাসম্পদের অন্যায্য হস্তান্তর’ বন্ধ করতে এবং নিজ দেশে কর্মসংস্থান সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের শুল্কারোপ করছেন।
অর্থনৈতিক মূলনীতি অনুযায়ী শুল্কারোপ করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকদের জন্য আমদানি করা চীনা পণ্যের চেয়ে মার্কিন পণ্য বেশি সস্তা হবে। কাজেই তারা আমদানি করা পণ্য না কিনে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পণ্যই কিনতে চাইবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘরোয়া অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে ও দেশের অভ্যন্তরে ব্যবসা প্রসার লাভ করবে। কিন্তু এর ফলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঘরোয়া অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যনীতি অনুসরণ করছেন ট্রাম্প, যা যুগ যুগ ধরে চলতে থাকা বৈশ্বিক মুক্তবাণিজ্য ব্যবস্থার পরিপন্থি।