রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার সিও রোডের জগাই কুণ্ডু (৬৫) ছানা আর দই বিক্রি করে দারিদ্র্যকে জয় করেছেন। বাড়ি সংলগ্ন দই ও ছানা তৈরির কারখানায় কথা হয় জগাই কুণ্ডুর সঙ্গে। তিনি বলেন, খুব কষ্ট করেছি। এখন সফল বলা যায়। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ডিগ্রি পাস করে ব্যবসায় সহযোগিতা করছে। মেয়ে রংপুরের কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অনার্সে পড়ছে।
জগাই কুণ্ডুর বাবা কুরান কুণ্ডু পাবনা থেকে পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়েসহ রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় অভিবাসিত হন। তিনি সিও রোড এলাকায় ছোট একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। নতুন জায়গায় পরিবারের ভরন-পোষণ নিয়ে পড়েন বিপাকে। জগাইয়ের ভাষায়, আমি পরিবারে সবার ছোট বলে একটু ডানপিটে ও কাজে অমনোযোগী ছিলাম। এ কারণে আমার মা-বাবার চিন্তার অন্ত ছিল না। সংসারের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমরা স্কুলে ভর্তি হতে পারিনি। বাবাকে সহযোগিতা করতে দাদারা অন্যের মিষ্টির দোকানে কাজ নেন।
তার বাবা গ্রাম থেকে দুধ কিনে ছানা আর দই বিক্রি করে কোনোরকমে সংসার চালাতেন। এক সময় বাবা বয়সের ভারে ব্যবসাও করতে পারছিলেন না। তখন অনেকটা জোর করে ছানা ও দই তৈরির কাজ তাকে শেখান বাবা।
এক সময় দাদারা ধীরে ধীরে ব্যবসা ও মিষ্টি তৈরিতে দক্ষতা অর্জন করতে থাকেন। চার দাদা মিলে ছোট্ট পরিসরে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। বাবা মারা যাওয়ার পর তার ব্যবসার হাল ধরে দুধ দিয়ে তৈরি ছানা দাদার দোকানে সরবরাহ করতে থাকেন।
ডানপিটে জগাই কুণ্ডু কখন যে মনের অজান্তেই ব্যবসায় মনোযোগী হয়ে পড়েন, তা মনে করতে পারেননি। চার দাদার দোকানে দই ও ছানা সরবরাহ করতে করতে উপজেলাসহ গোটা রংপুরে ছড়িয়ে পড়ে তাদের ব্যবসার পরিধি। এছাড়া বিভিন্ন জেলা হতে পাইকাররা এসে দই ও ছানা নিয়ে যান।
পরিশ্রম করে ব্যবসায় সফল হয়েছেন তিনি। তার কারখানায় অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সিও রোড মহল্লার বাসিন্দা ও বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বিমলেন্দু সরকার বলেন, তার দই গুণে ও মানে ভালো। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি করায় অনেকের পছন্দ এ দই।
নুর আলম