রাজর্ষি রায়: দর্শনার্থী সংখ্যার দিক বিবেচনা করা হলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা ভারতের পশ্চিবমবঙ্গ রাজ্যের ‘কলকাতা বইমেলা’। আর বইসংখ্যার ভিত্তিতে ফ্রাঙ্কফুর্ট ও লন্ডন বইমেলার পর এর অবস্থান। কারও কারও মতে, সার্বিক বিবেচনায় এশিয়ার বৃহত্তম বইমেলা এটি। অনেকে মনে করেন, এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বইমেলা। আর কলকাতাবাসীর কাছে দুর্গাপূজার পরই সবচেয়ে বড় উৎসব বইমেলা।
১৯৭৬ সালের ৫ মার্চ শুরু হয় কলকাতা বইমেলা। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের উল্টোদিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বসে প্রথম মেলা। তখন ৫৬টি স্টল ও ৩৪ জন প্রকাশক অংশ নিয়েছিলেন। প্রবেশ ফি ছিল ৫০ পয়সা। ১৯৮৪ সালে আন্তর্জাতিক বইমেলার স্বীকৃতি অর্জন করে। তখন থেকে প্রতিবছর ২৫ জানুয়ারি মেলা শুরুর দিন ঠিক করা হয়। পরে জানুয়ারির শেষ বুধবারকে বেছে নেওয়া হয়। ১৯৯১ সালে মেলার ফোকাল থিমে যুক্ত নয় নানা সংস্কৃতি। ১৯৯৭ সাল থেকে বইমেলায় অংশ নেওয়া একটি দেশকে ‘ফোকাল থিম’, অন্য একটি দেশকে ‘সম্মানিত অতিথি রাষ্ট্র’ নির্বাচন করা হচ্ছে। প্রথম থিম কান্ট্রি ছিল ফ্রান্স। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে এ মেলাতে থিম কান্ট্রি নির্বাচিত হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে বলিভিয়া। এবারের থিম কান্ট্রি ‘কোস্টারিকা’। বইয়ের মধ্য কোস্টারিকার সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, খাবার ও পর্যটন তুলে ধরা হয়েছে। ২৫ জানুয়ারির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশটির অনেক কবি, সাহিত্যিকসহ সৃজনশীল কর্মের সঙ্গে জড়িত অনেক ব্যক্তি অংশ নিয়েছিলেন। এবারের মেলা বসেছে পূর্ব কলকাতার মিলনমেলা প্রাঙ্গণে, সায়েন্স সিটির ইএম বাইপাসের কাছে।
আন্তর্জাতিক এ বইমেলায় বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, সংস্কৃতসহ অনেক ভারতীয় ভাষার বই পাওয়া যায়। তবে সিংহভাগজুড়ে থাকে বাংলা বই। মেলায় কোস্টারিকা ও বাংলাদেশের পাশাপাশি স্পেন, যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, জাপান, ভেনিজুয়েলা, ফ্রান্স, মেক্সিকো, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, চিলি, চীন ও গুয়াতেমালা অংশ নিয়েছে।
কলকাতা বইমেলায় শুধু বিক্রিবাট্টাই নয়, গ্রন্থ প্রকাশ, সেমিনার, পদযাত্রা, সাহিত্য উৎসব, প্রতিযোগিতা প্রভৃতিরও আয়োজন করা হয়। এবারের বইমেলায় নগদের পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থাও চালু করেছেন অনেক প্রকাশক।
কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের ৩১টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির। বাকি পাঁচটি সরকারি।মেলার শেষ দিন আজ।
Add Comment