২০০৯ সালের পর চীনের সর্বনিম্ন জিডিপি প্রবৃদ্ধি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে চীনের অর্থনীতিতে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। ২০০৯ সালের প্রথম প্রান্তিকের পর এটাই চীনের প্রবৃদ্ধির সবচেয়ে দুর্বল অবস্থা। খবর রয়টার্স।
৬৮ অর্থনীতিবিদের মতামত নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের করা এক জরিপে দেখা গেছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ। আগের তিন মাসে তা ছিল ছয় দশমিক সাত শতাংশ। ২০০৯ সালের প্রথম তিন মাসের ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পর এটিই দেশটির সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। তবে বছরের তৃতীয় ভাগের এই প্রবৃদ্ধিতেও সরকারের পুরো বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছয় দশমিক পাঁচ-এর চেয়ে বেশিই থাকবে।
চীনের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়ে গত জুলাইয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেশ কিছু চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর কর আরোপ করে। সব মিলিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন ডলারের শুল্কারোপ করেছে। এই নতুন শুল্কারোপ এমন সময় কার্যকর হচ্ছে যখন দুই দেশ সংকট নিরসনে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই বাণিজ্যযুদ্ধে এসব আলোচনা খুব বেশি কাজে আসছে না।
বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের মালিকানা, শিল্পে ভর্তুকি ও বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর চাপ দেওয়া শুরু করার পর থেকে দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমতে শুরু করেছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধীরগতি ঠেকাতে ইতোমধ্যে কিছু নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। বাণিজ্য খাতে সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি মার্কিন শুল্ক আরোপের ঝুঁকির বিষয়ে নিজেদের প্রচারণায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে। মার্কিন বর্ধিত শুল্ক পুরোপুরি কার্যকর হলেও তেমন ঝুঁকি থাকবে না বলে এতদিন বলে আসছিল দেশটি। এখন তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে চীনের প্রবৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় তা ঠেকাতে আরও সহায়ক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
সাংহাইয়ের ব্যাংক অব কমিউনিকেশনের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ তাং জিয়ানবিউ বলেন, ‘ব্যয় সংকোচন ও অবকাঠামো বিনিয়োগ এখনও স্থিতিশীল না হলেও তুলনামূলকভাবে অর্থনীতির ওপর চাপ কমানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘বাহ্যিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নীতির সমন্বয় করা জরুরি।’
এক অনানুষ্ঠানিক জরিপে দেখা গেছে, ১৫ মাস ধরে সম্প্রসারণের পর চীনের বিশাল উৎপাদন খাত সেপ্টেম্বরে থেমে গেছে, কারণ আমদানির চাহিদাও গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম পর্যায়ে রয়েছে। একটি আনুষ্ঠানিক জরিপেও চীনের কারখানাগুলোর উৎপাদন কমার কথা জানানো হয়েছে। আরেকটি বিষয় দেখা গেছে যে, আগেকার সুবিধা ভোগ করতে মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে কোম্পানিগুলো তাদের রফতানি বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে সেপ্টেম্বরে চীনের রফতানিতে অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দামও এ বছর ছয় শতাংশ কমেছে। এটার পেছনেও মার্কিন শুল্ক আরোপের বিষয়টি প্রভাব ফেলেছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০