খামার তৈরির স্বপ্ন তার চোখেমুখে

আলমগীর হোসেন, বগুড়া: বিগত ৫ বছর ধরে উন্নত জাতের শাহী পেঁপে চাষ করে আসছেন কৃষক ইন্না প্রামানিক। তবে এবারের শীত মৌসুমে পেঁপে ক্ষেতে আঁদা ওলকচুসহ কয়েক ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন ইন্না প্রামানিক। একটু বুদ্ধি করে একই জমিতে কয়েক প্রকার সবজি চাষাবাদ করে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হয়েছেন তিনি।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ডি-ডওর গ্রামে বাড়ি ইন্না প্রামানিকের। সাফল্যের সেই মন্ত্রণা ছড়িয়ে দিয়েছেন এলাকার তরুনদের মধ্যে। পেঁপে ক্ষেতে তার কলাকৌশল দেখে গাবতলীর প্রায় শতাধিক শিক্ষিত বেকার যুবক পেঁপে চাষের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন।
ইন্না প্রামানিক নিজেও যুবক। মাত্র ২৫ বছর বয়সে কুষিকাজের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। পরিবারে সুদিন ফিরিয়ে এনেছেন। একটাই আফসোস, বাবা সেই সাফল্য দেখে
যেতে পারেননি।
এ বছর তিনি ৭০ শতক জমিতে উন্নতজাতের দেশি শাহী পেঁপে চাষ করেছেন। পেঁপের চারা, সার, ওষুধ, শ্রমিকসহ ব্যয় হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। চুরির হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য তিনি জমিতে রাঁত জেগে পাহাড়া দিয়েছেন। অনেকে তার পেঁপে বাগান কিনতে চেয়েছিলেন। অন্যান্য কৃষকদের মতো সে পথে হাটেননি তিনি। সেই বুদ্ধিমত্তার সুফলও পেয়েছেন। মরিচ, টমেটো, পটল, ফুলকপি, শিম চাষ করে বেশ
লাভবান হয়েছেন।
ইন্না কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন গাবতলী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমের প্রতি। এ কৃষি কর্মকর্তা সার্বিকভাবে ইন্নাকে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। জাহাঙ্গীর আলমের পরামর্শে নেপালতলী ইউয়িনের বেকার যুবকরাও কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন।
ভবিষ্যতে একটি কৃষি খামার প্রতিষ্ঠা করতে চান ইন্না প্রামানিক। তিনি জানান, প্রথমে ৮শতক জমিতে পেপেঁ চাষ করে লাভ করেছিলাম ২৫হাজার টাকা। এরপর গতবছরে ৩৬শতক জমি থেকে লাভ করি প্রায় ২ লাখ টাকা। এবছরে শুধু পেপেঁ বিক্রি করেই ৪ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। একই সঙ্গে আমি একই জমির ১৮ শতকে আদা ও ২২ শতকে ওলকচু চাষ করেছি। এ দুই সাথি-ফসল থেকে ১ লাখ টাকা লাভ করেছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইন্না একজন আদর্শ কৃষক। কৃষি অধিদপ্তর তাকে সহযোগিতা করেছে। নেপালতলী ইউনিয়নে পেঁপে চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। গাবতলী উপজেলা কৃষি সমপ্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, অন্যান্য ফসলের চেয়ে পেঁপে চাষ লাভজনক। ইন্না তার দৃষ্টান্ত। এজন্য কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, কৃষকদের পেঁপে চাষে উৎ্সাহ প্রদান অব্যাহত থাকবে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের তথ্য ও পরামর্শ দিচ্ছেন। আশাকরছি আগামীদিনে পেঁপে ও শীতকালিন সবজি চাষ ও উৎপাদন আরো বাড়বে। ইন্নার মতো অনেকে স্বাবলম্বী হবেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০