জাহাজ বিক্রির টাকায় মুনাফায় বিএসসি

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: সম্পদ বিক্রির ওপর নির্ভর করে মুনাফা বেড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি)। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা আগের বছরের চেয়ে প্রায় চার কোটি টাকা বেড়েছে। মূলত এ অর্থের সিংহভাগই এসেছে প্রতিষ্ঠানটির জাহাজ বিক্রি করা অর্থ থেকে। এ অর্থ মুনাফায় যোগ হওয়ার ফলে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্পদ বিক্রির টাকা মুনাফায় যোগ করার নিয়ম থাকলেও এটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বাজারসংশ্লিষ্টদের মধ্যে। তারা বলছেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্পদ বিক্রি ভালো লক্ষণ নয়। সাধারণত প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো সমস্যায় পড়লে তারা সম্পদ বিক্রি করে। তবে বিশেষ কোনো কারণে কোম্পানির সম্পদ বিক্রির করার প্রয়োজন হলে কোম্পানি সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অর্থাৎ কোম্পানির অন্যান্য কার্যক্রম যদি ভালো থাকে তাহলে বিষয়টি ভয়ের কিছু নেই।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, সম্পদ বিক্রির অর্থ ক্যাপিটাল গেইনে যোগ হয়। এটি যোগ হয় শেয়ারপ্রতি আয়ে (ইপিএস)। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এ অর্থ ভাগ হয়ে যায়। তাই কোনো কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রির অর্থ ক্যাপিটাল গেইনে যোগ হতে বাধা নেই।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে এ প্রতিষ্ঠানের মুনাফা হয়েছে ১২ কোটি ৫১ লাখ ৫৭ হাজার ৪১৩ টাকা। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল আট কোটি ৬৫ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪১ টাকা। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে তিন কোটি ৮৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৭২ টাকা। এর মধ্যে যোগ হয়েছে এম বাংলার শিখা জাহাজ বিক্রির অর্থ। জাহাজটি বিক্রি হয় চার কোটি ৯২ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির অন্যান্য আয়ও বেড়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির এ খাতে আয় হয়েছে ৪৩ কোটি ৩১ হাজার টাকা। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ এ বছর এই খাত থেকে আয় বেড়েছে আট কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির মোট আয়ও বেড়েছে এক কোটি টাকা। এ বছর প্রতিষ্ঠানটির রেভিনিউ হয়েছে ৮৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এদিকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ছয় কোটি ৭২ লাখ টাকা। ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩৪ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বাকি ৫২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের কাছে।
কোম্পানির গতকালের লেনদেন চিত্রে দেখা যায় দিন শেষে এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ৪০ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়। দর ওঠানামা করে ৩৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৪০ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে। অন্যদিকে গত এক বছরের লেনদেনে এ শেয়ার সর্বোচ্চ ৪৯ টাকায় লেনদেন হয়। একই সময়ে শেয়ারটি সর্বনিম্ন ৩৪ টাকা ৯০ পয়সায় কেনাবেচা হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০