কাশিয়ানীতে দাদন ব্যবসায়ীরা সক্রিয়

দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দাদন ব্যবসায়ীরা। দিন দিন সুদের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। উপজেলার বিলাঞ্চলের সাধারণ কৃষকরা দাদন ব্যবসায়ী ও এনজিও’র হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশি লাভের আশায় গ্রামের প্রভাবশালী ধনী ব্যক্তিরা এ লগ্নি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এ ধরনের সুদখোর দাদন ব্যবসায়ী চক্র গড়ে উঠছে।
উপজেলায় কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মান্ধাতা আমলের চাষাবাদের জায়গায় স্থান করে নিয়েছে যান্ত্রিক চাষাবাদ পদ্ধতি। বেড়েছে ইরি-বোরো ফসলের আবাদ। আর এ সব ধান চাষাবাদে প্রয়োজন হচ্ছে পর্যাপ্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। এদিকে সেচ, সার ও কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। এ বাড়তি খরচ জোগানোর জন্য কৃষকদের নির্ভর করতে হয় সুদখোর মহাজনদের ওপর। আর এ সুযোগে লগ্নি ব্যবসায়ী নামধারী সুদখোর দাদন ব্যবসায়ীরা ফাঁদ পেতে বসে থাকে।
যারা ২-৩ মাসের জন্য ৫০ ভাগ লাভে টাকা ধার দেয়। আবার অনেকে এক হাজার টাকা ধার দিয়ে দুই মাস পর ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা আদায় করে। এছাড়া দাদন ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কৃষি উপকরণও দিয়ে থাকেন। তারা ডিজেল সার, তেল, কীটনাশক কৃষকের নিকট বাকিতে বিক্রি করেন। ধান কাটার পর বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
কাশিয়ানী বেথুড়ী গ্রামের লিটু জানান, ব্যাংক ঋণ পেতে নানা ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়। আর তাই ঝামেলা এড়াতে তিনি গ্রামের এক মহাজনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে ধান চাষাবাদ করছেন। ইরি বোরো মৌসুম শুরুতে এ অঞ্চলের অভাবী কৃষকদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগে এক হাজার টাকার এক মন ধান দেওয়ার শর্তে টাকা দিচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীরা। মৌসুম শেষে কৃষকদের কষ্টে অর্জিত ফসলের অধিকাংশ চলে যায় দাদন ব্যবসায়ীদের গোলায়। ফলে সাধারণ কৃষকদের ৫৩ থেকে ৭০ শতাংশ হারে সুদ গুনতে হয়। এছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত ধান মহাজনদের কাছে অত্যন্ত কম দরে দিতে হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০