ডেইরি ফার্মে স্বাবলম্বী দম্পতি

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার খাওনার দরগাহে আফজাল হোসেন ও লাভলী বেগম দম্পতি গড়ে তুলেছেন আল ইমরান ডেইরি ফার্ম। তাদের ফার্মে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক হতদরিদ্র মানুষের।
ফার্মটির দুধ, মাংস ও জৈবসার স্থানীয় চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। এক আলাপচারিতায় জানা গেছে, আফজাল হোসেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। স্বল্প আয়ের মানুষ ছিলেন তিনি। সংসারে ছিল অভাব। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ভিটেটুকুই ছিল একমাত্র সম্বল। তার স্ত্রী লাভলী বেগম পরিবারে সচ্ছলতা আনার তাগিদ অনুভব করতেন সব সময়ে। আয়ের মাধ্যম বাড়ানোর কৌশল খুঁজতেন। তার বাবা আবুল হোসেনের অনুপ্রেরণায় খাওনার দরগাহে বসবাস শুরু করেন এবং চারটি ফ্রিজিয়ান গাভি দিয়ে শুরু করেন ডেইরি ফার্মের কার্যক্রম।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশ, এসএসএস ও ব্র্যাক ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে থাকেন। তাদের পরিশ্রমের সুবাদে বর্তমানে এ ফার্মে ১৯টি দুগ্ধদানকারী গাভি, ১২টি বকনা বাছুর ও ৯টি দামড়া বাছুর রয়েছে। প্রতিদিন এ ফার্মে সাড়ে চার মণ দুধ উৎপাদিত হয়। শুধু দুধ থেকেই মাসে প্রায় দুই লাখ টাকা আয় করছেন তারা। ফার্মের বকনা বাছুর বিক্রি করলেও প্রতি বছর দামড়া বাছুর বিক্রি করে লাভবান হয়েছে এই দম্পতি। ইতোমধ্যে ৫০টি গরু বিক্রি করে তারা আয় করেছেন প্রায় ১৮ লাখ টাকা। এরপর আছে কম্পোস্ট সার বিক্রি।
বর্তমানে এ ফার্মে পাঁচ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। আফজাল হোসেন বলেন, কুড়িগ্রামে দুধ বিক্রির উপযুক্ত জায়গা না থাকায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সময় ক্রেতার অভাবে দুধ নষ্ট হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে দুর্যোগকালীন সময় গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিলে একটু হিমশিম খেতে হয় খামারের গরুগুলো নিয়ে। ঋণ দেওয়ার বেলায় ব্যাংকের উদাসীনতা রয়েছে। ফলে ফার্মের প্রসার ঘটাতে পারছেন না তিনি।
উলিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল আজিজ প্রধান বলেন, এ ফার্মের গরুগুলো রোগবালাইমুক্ত রয়েছে। দুধের উৎপাদনও ভালো। বায়োগ্যাস প্লান্ট করতে পারলে আরও অধিক পরিমাণ কম্পোস্ট সার পাওয়া যাবে। তবে দুধ বিক্রির স্থান না থাকায় খামারিরা চিন্তাগ্রস্ত থাকেন।

আমানুর রহমান খোকন

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০