‘আঁটি রেখে ধান মাড়ি’ এ স্লোগান সামনে রেখে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ডা. আনোয়ার হোসেন এবার নতুন একটি কৃষিযন্ত্র ‘ডিজিটাল ধান মাড়াই মেশিন’ তৈরি করেছেন।
সম্প্রতি পৌর এলাকার চাঁদপাড়া গ্রামে ডা. আনোয়ারের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি নতুন মেশিনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুস সালাম চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামিম আশরাফ, উপজেলা প্রকৌশলী শাহিদুজ্জামান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাফিউল ইসলামসহ উপজেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত ডা. আলাউদ্দিন সরকারের ছেলে পল্লিচিকিৎসক আনোয়ার হোসেন ২০১৪ সালে ফসল কাটা ও মাড়াই যন্ত্র তৈরি করে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর তিনি ডিজিটাল আনোয়ার এক্সেল রিমোট কন্ট্রোল পাওয়ার টিলার ও মিনি ট্রাক্টর তৈরি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি ডিজিটাল ধান মাড়াই মেশিন তৈরি করেছেন।
ডা. আনোয়ার বলেন, বাজারের যেসব মেশিন দিয়ে ধান মাড়াই করা হয়, তাতে ধানের যে খড় থাকার কথা সেটি নষ্ট হয়ে যায়। অথচ এই খড় গো-খাদ্যসহ নানা কাজে ব্যবহার করা যায়। বাজারে এই খড়ের চাহিদা রয়েছে। খড় ঠিক রাখার বিষয়টি মাথায় রেখেই তিনি নতুন ধান মাড়াই মেশিনটি তৈরি করেছেন। তার এ মেশিনে ধান মাড়াই করলে পুরো আঁটি ঠিক থাকবে, ভাংবে না। এতে খড়ের কোনো ক্ষতি হবে না। খরচ ও সময় বাঁচবে।
এ মেশিনে যে যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে, তা সবই তার নিজস্ব লেদে তৈরি করা। এ কারণে বাজারের অন্য মেশিনের তুলনায় বেশি মজবুত। মেশিনটির দাম তুলনামূলক কম, যা কৃষকের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে।
ডা. আনোয়ার বলেন, একের পর এক কৃষিযন্ত্র তৈরি করলেও অর্থের অভাবে বাজারজাত করতে পারছি না। সরকার ঋণ দিয়ে সহায়তা করলে এ যন্ত্রটি সারা দেশের কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারব। এতে কৃষক স্বল্পমূল্যে কৃষিযন্ত্র কিনে উপকৃত হবেন। তাই তিনি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এটিএম হামিম আশরাফ বলেন, বিদেশ থেকে আনা কৃষিযন্ত্রের তুলনায় ডা. আনোয়ারের তৈরি এ মেশিনের মান ভালো। তার উদ্ভাবিত কৃষিযন্ত্রগুলো কৃষি খাতকে আধুনিকায়ন করবে বলে তিনি আশা করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, ডা. আনোয়ারের এই কৃষিযন্ত্র যেন বাজারজাত করা যায়, সেজন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।
মো. রজব আলী