আমদানি ও রফতানি করা পণ্যসামগ্রী জাহাজ, বিমান অথবা অন্য যে কোনো পরিবহনের মাধ্যমে আনা-নেওয়া করা হোক না কেন আমদানিকারককে পণ্যসামগ্রী নিতে হলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বা পণ্য বহনকারী কর্তৃপক্ষের নিয়মকানুন পালন করতে হবে। রফতানিকারকদের ক্ষেত্রে স্পেস বুকিং, পণ্য প্যাকিং, মার্কিং, শুল্ক খালাস, বন্দর চার্জ প্রদান বিল অব লেডিং প্রভৃতি নিয়ম মেনে চলতে হবে। কিন্তু আমদানিকারক ও রফতানিকারকের পক্ষে এসব নিয়ম মেনে সহজ ও দ্রুততার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। এজন্য তাদের অনেক কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব সরকার অনুমোদিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে দেওয়া যেতে পারে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তাদের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমে কাজগুলো সম্পন্ন করে পণ্য ডেলিভারি ও প্রেরণের ব্যবস্থা করে থাকে।
জিএসপি সার্টিফিকেট
উন্নয়নশীল দেশের রফতানিকারকদের সুবিধার্থে উন্নত দেশগুলো কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে। এসব সুবিধাপ্রাপ্তির লক্ষ্যে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে রফতানিকারকদের জিএসপি সার্টিফিকেট নিতে হয়।
কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্টিফিকেট
রফতানিকারকদের কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্টিফিকেট নিতে হয়। রফতানিকারক দেশের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্যের গুণ ও মানসম্পর্কিত একটি প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে, যা কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্টিফিকেট নামে পরিচিত।
কনস্যুলার ইনভয়েস
উপসাগরীয় অঞ্চল ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর ক্ষেত্রে কনস্যুলার ইনভয়েস প্রয়োজন হয়। এই ইনভয়েস রফতানি পণ্যের সঠিক বিবরণ নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়। কনস্যুলার ইনভয়েসের অনুপস্থিতিতে গন্তব্য বন্দরে থাকা পণ্য খালাস করতে দেরি হতে পারে। তাই যথাসময়ে সঠিকভাবে এই দলিল সংগ্রহ করা আবশ্যক।
প্যাকিং লিস্ট
প্যাকিং লিস্টে কন্টেইনার ও বেল সংখ্যা, প্যাকেজ সংখ্যা, মোট ও নিট ওজন, শিপিং চিহ্ন ও নম্বর প্রভৃতি বিবরণ লেখা থাকে। এতে ক্রেতা ও কোম্পানির পক্ষে রফতানি চালান খুঁজে পাওয়া ও খালাস করা সহজ হয়।
সার্টিফিকেট অব অরিজিন
ইসিভুক্ত দেশ অর্থাৎ ইউরোপীয় দেশগুলোতে পণ্য রফতানি করলে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে সার্টিফিকেট অব অরিজিন সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য যেসব কাগজপত্র দরকার নির্ধারিত ফরম। শিপিং বিল। ব্যাংকের সত্যায়িত রফতানি ঋণপত্র। ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র। নির্ধারিত অঙ্কের পে-অর্ডার। বিজিএমইএ’র ইস্যুকৃত আইডি কার্ড। প্যাকিং লিস্ট। কমার্শিয়াল ইনভয়েস। হালনাগাদ ইনরোলমেন্ট সার্টিফিকেট। ভিসা উইং ফরম।
বিল অব লেডিং
পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বিল অব লেডিং একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি রফতানিকারক দেশ থেকে আমদানিকারক দেশে পণ্য প্রেরণের সাক্ষ্য বহন করে।
প্রোফর্মা চালান
আমদানিকারক ও রফতানিকারকের মধ্যকার ঐকমত্যের ভিত্তিতে উভয় দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় বৈধ চুক্তি সম্পাদন করা যেতে পারে। যে দলিলে চুক্তির সব উপাদান বর্ণিত থাকে তাকে প্রোফর্মা চালান বলে, যা রফতানি বাণিজ্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। চুক্তিতে যেসব বিষয় থাকে:
পণ্যের বিবরণ, পণ্যের পরিমাণ ও গুণগত মান, মূল্য পরিশোধ শর্ত, পণ্য জাহাজীকরণের সময় ও পণ্য প্রেরণের স্থান, বিক্রয় শর্ত, প্যাকিং ও মার্কিংয়ের বর্ণনা ও পণ্যের বিমাকরণ।
কমার্শিয়াল ইনভয়েস
রফতানিকারকের জন্য বাণিজ্যিক ইনভয়েস জরুরি। এতে পণ্যের বিবরণ, মূল্য, পরিমাণ, গুণগত মান, প্যাকেজ সংখ্যা, ক্রেতার নাম, ঋণপত্র ও বিক্রয় নম্বর, পণ্যের গ্রেড, আয়তন, জাহাজের নাম, জাহাজীকরণের তারিখ, বিল অব লেডিং সংখ্যা প্রভৃতি তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে।
তথ্যসূত্র: এসএমই ফাউন্ডেশন