ফরিদপুরে চলতি মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি-১৪, বারি-১৫, টোরি-৭ বা মাঘি সরষে এবং রাই সরষের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষি। সরষের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। স্বল্প খরচে অল্প সময়ে উৎপাদন বেশি হওয়ায় দিন দিন এ অঞ্চলে বাড়ছে সরষের আবাদ। মাঠে মাঠে এখন শুধুই হলুদের সমারোহ। দৃষ্টিজুড়ে যেন সরষের হলুদ গাঁদা। আর ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছির দল।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ফরিদপুরের চাষিরা বিনা চাষে সরষের বীজ আবাদ করেছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। সরষে চাষ করতে কম সার লাগে। একই সঙ্গে সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানির প্রয়োজনও পড়ে না। কম খরচ ও স্বল্প সময়ে সরষে ঘরে তোলা যায়। সরষে আবাদের ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পরবর্তীকালে ইরি, বোরো ও পেঁয়াজ চাষাবাদের সময় সার ব্যবহারের খরচ কমে আসে। ফলে একই জমিতে বছরে চারটি ফসল উৎপন্ন করে চাষি ব্যাপক লাভবান হবেন।
বীজ বোনার পর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় দ্রুত বেড়ে উঠেছে এখানকার সরষে গাছ। কয়েকদিন পর শুরু হবে ক্ষেত থেকে সরষে তোলার কাজ। এখন চলছে ক্ষেত পরিচর্যা। আমন, ইরি ও হালি পেঁয়াজ আবাদের মাঝে যে সময় থাকে, সে সময়ে চাষিরা জমি পতিত ফেলে না রেখে সরষে আবাদ করে থাকেন। অল্প সময়ে সরষে আবাদ করে বাড়তি ফসল ঘরে তোলা যায়।
কৃষক বক্তার খান বলেন, এ বছর সরষের বাম্পার ফলন আশা করছি। সরষে চাষে খরচ কম। কম খরচে অধিক লাভ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছর জেলার তিন হাজার ৫০০ কৃষক-কৃষানিকে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরষে বীজ তিন হাজার ৫০০ কেজি, ৭০ হাজার কেজি ডিএপিসার, ৩৫ হাজার কেজি এমওপি সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এক হাজার ৯২ কৃষক ও কৃষানির মাঝে দুই হাজার ১৮ কেজি সরষে বীজ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর প্রায় সাত হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে সরষের আবাদ হয়েছে।
কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, যেহেতু দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে এবং জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, ফসলের উৎপাদন যাতে একই জমিতে বেশি পাওয়া যায় সেজন্য ক্রপিং প্যাটার্নে পরিবর্তন আনা জরুরি। বিশেষ করে আমাদের যে জমিগুলোয় তিন ফসল হতো, সে জমিগুলোকে আমরা চার ফসলে রূপান্তর করছি। এতে আমাদের কৃষি খাতের আয় বাড়বে।
কেএম রুবেল